পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস তিনি গুরুজন, আমি অস্বীকার কারনে, কিন্তু সংসারে সেই কথাটাই কি সকল কথার বড় ? বিপ্রাস পূর্ববং স্থির হইয়া রহিল। বন্দন বলিতে লাগিল, আজ আমরা ছিলুম তার বাড়িতে অনাহূত অতিথি। এ ত আমার বই-পড়া বিদেশের শিক্ষা নয় ? তবু ত এসব কিছুই নয়—শুধু বয়সে ছোট বলেই কি আমারই অপমানটা আপনার অগ্রাহ করবেন ? এখনও বিপ্রদাস কিছুই বলিল না, তেমনি নীরবে রহিল। বন্দনা কহিল, তবুও তার কাছে আমি ক্ষমা চাইচি। আমার আচরণের জন্যে দিদি যেন না দুঃখ পান। একটু থামিয়া বলিল, আমার বাপ-মা বিলেত গিয়েছেন বলে মেমসাহেব ছাড়া তাকে আজও কিছু তিনি ভাবতেই পারেন না। শুনেচি, এই জন্তেই নাকি আজও মেজদির গঞ্ছনার পরিসমাপ্তি ঘটেনি। তার ধারণার সঙ্গে আমার ধারণা মিলবে না, তবু তাকে বলবেন, আমি যাই হই, অপমানটা অপমান ছাড়া আর কিছু নয়। দিদির শাশুড়ী করলেও না । বলিতে বলিতে তাহার চোখের কোলে জল আসিয়া পড়িল । বিপ্রদাস ধীরে ধীরে বলিল, কিন্তু তিনি ত তোমাকে অপমান করেন নি । বন্দনা জোর দিয়া বলিল, নিশ্চয় করেচেন। বিপ্রদাস তৎক্ষণাৎ উত্তর দিল না, কয়েক মূহূৰ্ত্ত নীরবে থাকিয়া কহিল, नl, অপমান তোমাকে মা করেননি। কিন্তু তিনি নিজে ছাড়া এ কথা তোমাকে কেউ বোঝাতে পারবেন না। তর্ক করে নয়, তার কাছে থেকে এ কথা বুঝতে হবে। বন্দনা জানালার বাহিরে চাহিয়া রহিল । বিপ্রদাস বলিতে লাগিল, একদিন বাবার সঙ্গে মার ঝগড়া হয়। কারণটা তুচ্ছ, কিন্তু হয়ে দাড়াল মস্ত বড়। তোমাকে সকল কথা বলা চলে না, কিন্তু সেই দিন বুঝেছিলাম আমার এই লেখাপড়া-না-জানা মায়ের আত্ম-মর্যাদাবোধ কত গভীর। বন্দন৷ সহসা ফিরিয়া দেখিল অপরিসীম মাতৃ-গৰ্ব্বে বিপ্রদাসের সমস্ত মুখ যেন উদ্ভালিত হইয়া উঠিয়াছে। কিন্তু সে কিছুই না বলিয়া আবার জানালার বাহিরেই চাহিয়া রহিল। বিপ্রদাস বলিতে লাগিল, অনেকদিন পরে কি-একটা কথার স্বত্রে একদিন এই কথাই মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম—ম, এত বড় আত্মমৰ্য্যাদাবোধ তুমি পেয়েছিলে কোথায় ? s বন্দন মুখ না ফিরাইয়াই কহিল, কি বললেন তিনি ? বিপ্রশ্বাস কহিল, জান বোধ হয় মায়ের আমি আপন ছেলে নই। তার নিজের ছুটি ছেলে-মেয়ে আছে—জুি আর কল্যাণী। মা বললেন, তোদের তিনটিকে এক \రి