পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রিদাস দ্বিতীয় মোটরে আসিয়াপোঁছিল দ্বিজদাস ও তাহার ভ্রাতুষ্পুত্ৰ—বাস্থদেব। মেজরি ছেলেকে বন্দন সেদিন দেখিতে পায় নাই। সে ছিল পাঠশালায়ও এবং তাহার ছুটির পূৰ্ব্বেই বনানা বাড়ি হইতে চলিয়া আসিয়াছিল। পিতামহীকে ছাড়িয়া বাস্থ থাকে না, তাই সঙ্গে আসিয়াছে এবং তাহারি সঙ্গে বাড়ি ফিরিয়া যাইবে । কাক পরিচয় করাইয়া দিলে বাস্থদেৰ প্ৰণাম করিল। বন্দনার পায়ে জুতা দেখিয়া সে মনে মনে বিস্থিত হইল, কিন্তু কিছু বলিল না । আট-নয় বছরের ছেলে, কিন্তু জানে সব । বন্দন। সক্ষেহে বুকের কাছে টানিয়া লইয়া জিজ্ঞাসা করিল, আমাকে চিনতে পারলে ন বাস্থ ? পেরেচি মাসিমা । কিন্তু তুমি ত ছিলে তখন পাঁচ-ছ বছরের ছেলে—মনে থাকবার ত কথা নয় বাবা ? তৰু মনে আছে মাসিম, তোমাকে দেখেই চিনতে পেরেছিলুম। আমাদের বাড়ি থেকে তুমি রাগ করে চলে গেলে, আমি ফিরে গিয়ে তোমাকে দেখতে পেলুম না। রাগ করে চলে যাবার কথা তুমি কার কাছে শুনলে ? কাকাবাবু বলছিলেন ঠাকুরমাকে । বন্দন। দ্বিজদাসের প্রতি চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিল, রাগ করার কথা আপনিই বা জানলেন কি করে ? দ্বিজদাস কহিল, শুধু আমিই নয়, বাড়ির সবাই জানে। তা ছাড়া আপনি লুকোবার ত বিশেষ চেষ্টা করেননি । বন্দন বলিল, সবাই আমার রাগ করাটাই জানে, তার কারণটা কি জানে ? দ্বিজদাস বলিল, সবাই না জামুক আমি জানি। রায়সাহেবকে একলা টেবিলে খেতে দেওয়া হয়েছিল বলে । বন্দন বলিল, কারণটা যদি তাই-ই হয়, আমার রাগ করাটা আপনি উচিত বিবেচনা করেন ? দ্বিজদাস কহিল, করি। যদিও তাদেরও আর কোন উপায় ছিল না। আপনি আমার বাবার সঙ্গে বসে খেতে পারেন ? পারি। কিন্তু, দাদা বারণ করলে পারিনে । পারেন না ! কিন্তু আপনাকে বারণ করার অধিকার দাদার আছে মনে করেন ? দ্বিজদাস বলিল, সে র্তার ব্যাপার আমার নয়। আমার পক্ষে দাদার অবাধ্য হওয়া অনুচিত মনে করি । বন্দনা কহিল, যা কর্তব্য বলে বোঝেন তা করায় কি আপনার সাহস নেই ? t?