পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

డిసె যে শয্যা স্পর্শ করিতেও আজ অচলার ঘৃণা বোধ হওয়া উচিত ছিল, তাহাই যখন সে যথা-নিয়মে প্রস্তুত করিতে অপরাহ্লবেলায় ধরে প্রবেশ করিল, তখন সমস্ত মনটা যে তাহার কোথায় এবং কি অবস্থায় ছিল—মানব-চিত্ত সম্বন্ধে যাহার কিছুমাত্র অভিজ্ঞতা আছে তাহারই অগোচর বুহিবে না। যন্ত্র-চালিতের মত অভ্যস্ত কৰ্ম্ম সমাপন করিয়া ফিরিবার মুখে পাশের ছোট টেবিলটির প্রতি অকস্মাৎ তার চোখ পড়িয়া গেল ; এবং ব্লটিং প্যাডখানির উপর প্রসারিত একখানি ছোট্ট চিঠি সে চক্ষের নিমেষে পড়িয়া ফেলিল । মাত্র একটি ছত্র। বার, তারিখ নাই, মৃণাল লিথিয়াছে—সেজদামশাই গো, করচ কি ? পরশু থেকে তোমার পথ চেয়ে চেয়ে তোমার মৃণালের চোখ দুটি ক্ষয়ে গেল যে ! বন্ধক্ষণ অবধি অচলার চোখের পাতা পড়িল না। ঠিক পাথরে-গড় মূৰ্ত্তির পলকবিহীন দৃষ্টি সেই একটি ছত্রের উপর পাতিয় সে স্থির হইয়া দাড়াইয়া রহিল। এ চিঠি কবেকার, কখন, কে আনিয়া দিয়া গেছে—সে কিছুই জানে না । মৃণালের বাট কোন দিকে, কোন মুখে তাহার বাড়ি ঢুকিতে হয়, কোন পথটার উপর, কিজান্য সে এমন করিয়া তাহার ব্যগ্র উৎসুক দৃষ্টি পাতিয়া রাখিয়াছে, তাহার কিছুই জানিবার জো নাই। সম্মুখের এই কটি কালির দাগ শুধু এই খবরটুকু দিতেছে যে, কোন এক পরশু হইতে একজন আর একজনের প্রতীক্ষায় পথ চাহিয়া চোখ নষ্ট করিবার উপক্রম করিয়াছে, কিন্তু দেখা মিলে নাই । এদিকে সেই প্রায়ান্ধকার ঘরের মধ্যে একদৃষ্টে চাহিয়া চাহিয়া, তাহার নিজের চোখদুটি বেদনায় পীড়িত এবং কালো কালো অক্ষরগুলা প্রথমে ঝাপসা এবং পরে যেন ছোট ছোট পোকার মত সমস্ত কাগজময় নড়িয়া বেড়াইতে লাগিল । তবুও এমনি একভাবে দাড়াইয়া হয়ত সে আর কতক্ষণ চাহিয়া থাকিত ; কিন্তু নিজের অজ্ঞাতসারে এতক্ষণ ধরিয়া তাহার ভিতরে ভিতরে যে নিশ্বাসটা উত্তরোত্তর জমা হইয়া উঠিতেছিল, তাহাই যখন অবরুদ্ধ স্রোতের বাধ ভাঙার ন্যায় অকস্মাং গর্জিয়া বাহির হইয়া আসিল, তখন সেই শৰে সে চমকিয়া সম্বিং ফিরিয়া পাইল। দ্বারের বাহিরে মুখ তুলিয়া দেখিল, সন্ধ্যায় আধার প্রাঙ্গণতলে নামিয়া আসিয়াছে এবং যন্ত্র চাকর হ্যারিকেন লণ্ঠন জালাইয়া বাহিরের ঘরে দিতে চলিয়াছে। ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, বাৰু ফিরে এলেচেন, যছ ? যদু কহিল, না মা, কৈ, এখনও ত তিনি ফেরেন নি। এতক্ষণে অচলার মনে পড়িল, দুপুরবেলায় সেই লজ্জাকর অভিনয়ের একটা অঙ্ক y evo