পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*द्भ६-जॉहिथिा-अर@iह তোমার স্বামী তাহার শরীর-মনের বর্তমান অবস্থা না বুঝিয়া রাগ করিতেও পারেন, অধীর হইয়া অন্যায় করিয়া চলিয়া আসিতেও পারেন, কিন্তু তুমি ত এখনো পাগল হও নাই যে, তিনি যাই বলিতেই তুমি স্বচ্ছন্দে সায় দিয়া বলিলে, আচ্ছ, তাই হোক, যাও তোমার সেই বনবাসে । তাই আমি কেবল ভাবি সেজদি, কি করিয়া প্রাণ ধরিয়া তোমার মৃত-কল্প স্বামীটিকে এত সহজে এই বনের মধ্যে বিসজ্জন দিলে এবং দিয়া স্থির হইয়া এই সাত-আটদিন বলি কেন, সাত-আট বৎসর নিশ্চিন্ত মনে বাপের বাড়ি বসিয়া রহিলে ! সত্য বলিতেছি, সেদিন যখন তিনি জিনিসপত্র লইয়া বাড়ি ঢুকিলেন, আমি হঠাৎ চিনিতে পারি নাই । তোমাদের কেন ঝগড়া হইল, কবে হইল, কিসের জন্য পশ্চিমে যাওয়ার বদলে তিনি দেশে চলিয়া আসিলেন, এ-সকল আমি কিছুই জানি না এবং জানিতে চাই না । কিন্তু আমার মাথার দিব্যি রইল, তুমি পত্রপাঠমাত্র চলিয়া আসিবে । জানইত ভাই, আমার শাশুড়ীকে ছাড়িয়া কোথাও যাইবার জো নাই । তবুও হয়ত আমি নিজে গিয়া তোমার পা ধরিয়া টানিয়া আনিতাম, যদি না সেজদা এতটা অসুস্থ হইয়া পড়িতেন । একবার এল, একবার নিজের চোখে তাকে দেখ, তখন বুঝিবে, এই অসঙ্গত; মান করিয়া কতদূর অন্যায় করিয়াছ । এ-বাড়িও তোমার, আমিও তোমার, সেইজন্য এ-বাড়িতে আসিতে কোন দ্বিধা করিবে না। তোমার পথ চাহিয়া রহিলাম, শ্রীচরণে শত কোটী প্রণাম । আর একটা কথা । আমার এই পত্র লেখার কথা সেজদা যেন শুনিতে না পান, আমি লুকাইয়া লিখিলাম। ইতি—তোমার মৃণাল । পত্র শেষ করিয়া মৃণাল একটা পুনশ্চ দিয়া কৈফিয়ৎ দিয়াছে যে, যেহেতু স্বামীর অনুপস্থিতিতে তুমি একটা বেলাও স্বরেশবাবুর বাটতে থাকিবে না জানি, তাই তোমার বাপের বাড়ির ঠিকানাতে লিখিলাম । ভরসা করি, এ পত্র তোমার হাতে পড়িতে বিলম্ব হইবে না। কেদারবাবুর হাত হইতে চিঠিখানা স্থলিত হইয়া পড়িয়া গেল, তিনি আর একবার শূন্তের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া তাহার চশমা-মোছার কাজে ব্যাপৃত হইলেন । এটুকু বুঝা গিয়াছে, মহিম জব্বলপুরের পরিবর্তে এখন তাহার গ্রামে রহিয়াছে, এবং অচলা (তথায় নাই । সে কোথায়, তাহার কি হইল, এ-সব ল ব থা হয় মহিম জানে না, না হয় জানিয়াও প্রকাশ করিতে ইচ্ছা করে না। হঠাৎ মনে হইল, স্বরেশই বা কোথায় ? সে যে তাহাদের অতিথি হইবে বলিয়া সঙ্গ লইয়াছিল। সে নিশ্চয়ই বাটতে ফিরে নাই, তাহ হইলে একবার দেখা করিতই। তাহার পরে পিতার বুকের মধ্যে যে আশঙ্কা অকস্মাৎ শূলের মত আসিয়া পড়িল, সে আঘাতে তিনি আর সোজা থাকিতে পারিলেন না, সেই আরাম-কেনারায় হেলান দিয়া দুই চক্ষু মুদ্রিত করিলেন । ❖ፃፀ