পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रृंश्लोइ মধ্যে স্বরেশের চিঠি আছে। পত্রে কোন অচিন্তনীয় বিবরণ লিপিবদ্ধ করা আছে, কোন দুর্গম রহস্তের পথের ইঙ্গিত দেওয়া হইয়াছে, তদণ্ডেই জানিবার জন্ত মনের মধ্যে তাহার ঝড় বহিতে লাগিল, কিন্তু এই প্রচও ইচ্ছাকে সে শান্ড-মুখে দমন করিয়া কাগজখানি পকেটে রাখিয়া দিল । অচলা কহিল, তুমি কি আজই ডিহরী থেকে চলে যাবে ? ই, এখানে থাকবার আমার সুবিধা হবে না । আমাকে কি চিরকাল এখানেই থাকতে হবে ? মহিম এক মুহূৰ্ত্ত মৌন থাকিয়া কহিল, তুমি কি আর কোথাও যেতে চাও? অচলা কহিল, কাল থেকেই আমিও কেবল ভাবচি। শুনেচি, বিলেত অঞ্চলে আমার মত হতভাগিনীদের জন্তে আশ্রম আছে, সেখানে কি হয়, আমি জানিনে, কিন্তু এদেশে কি তেমন কিছু—, বলিতে বলিতেই তাহার বড় বড় চোখ দুটি জলে টল টল করিতে লাগিল। এই প্রথম তাহার চক্ষে অশ্রু দেখা দিল । মহিমের বুকে করুশার তীর বিধিল, কিন্তু সে কেবল ধীরে ধীরে উত্তর দিল, আমিও জানিনে, তবে খোজ নিতে পারি । - কখনো তোমাকে চিঠি লিখলে কি তুমি জবাব দেবে না ? প্রয়োজন থাকলে দিতে পারি। কিন্তু আমার গুছিয়ে নিয়ে বার হতে দেরি হবে—আমি চললুম। অচলা তাহার শেষ দুঃখকে আজ মনে মনে স্বামীর পায়ে নিঃশেষে নিবেদন করিয়া দিয়া সেইখানেই মাটিতে মাথা ঠেকাইয়া প্রণাম করিল এবং তিনি বাহির হইয়া গেলে চৌকাট ধরিয়া চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিল। পথে চলিতে চলিতে মহিম ভাবিতেছিল, রামবাবুর বাটতে আর একমুহূৰ্ত্তও থাকা চলে না, অথচ সহরের মধ্যে আর কোথাও একটা দিনের জন্য আশ্রয় লওয়া অসম্ভব। যেমন করিয়াই হোক, এদেশ হইতে আজ তাহাকে বাহির হইতে হইবে, তা ছাড়া নিজের জন্ত এমন একটা নিরালা জায়গার প্রয়োজন, যেখানে ভূদও স্থির হইয়া বসিয়া শুধু কেবল খামখানার ভিতর কি আছে, তাই নয়, আপনাকে আপনি চোখ মেলিয়া দেখিবার একটুখানি অবসর মিলিবে। অচলাকে তিল তিল করিয়া ভালবাসিবার প্রথম ইতিহাস তার কাছে অস্পষ্ট, কিন্তু এই মেয়েটিকেই কেন্দ্র করিয়া তাহার জীবনের উপর দিয়া যাহা বহিয়া গিয়াছে তাহা যেমন প্রলয়ের মত অসীম, তেমনি উপমাবিহীন। আবার নিঃশৰ সহিষ্ণুতার শক্তিও বিধাতা তাহাকে হিসাব করিয়া দেন নাই। তাহার গৃহ যখন বাহির এবং 食°》