পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ অন্নপূর্ণ হঠাৎ সেইদিক দিয়া যাইতেছিলেন, বিন্দুর দিকে চাহিয়া সহস। দাড়াইয়া বলিলেন, তোর চোখ ছলছল করছে কেন রে ছোটবে ? জায় ত, গা দেখি । - বিন্দু এলোকেশীর সামনে ভারি লজ্জা পাইয়া বলিল, কি রোজ রোজ গা দেখবে। আমি কি কচি খুকি, অম্লখ করলে টের পাব না । অন্নপূর্ণ বলিলেন, না, তুই বুড়ি। কাছে আয়, ভাদর আশ্বিন মাস, দিনকাল বড় খারাপ । বিন্দু বলিল, কখনো যাব না। বলচি কিছু হয়নি, বেশ আছি, তৰু কাছে আয় ! অন্নপূর্ণ বলিলেন, দেখিস, ভাড়াসনে যেন ? বলিয়া সঞ্চি-দৃষ্টিতে চাহিতে চাহিতে চলিয়া গেলেন। এলোকেশী বলিল, বড়বেীর যেন একটু ব্যয়ের ছিষ্ট আছে, না ? বিন্দু একমুহূৰ্ত্ত স্থির থাকিয়া বলিল, ঐ-রকম ছিটু যেন সকলের থাকে ঠাকুরবি । এলোকেশী চুপ করিয়া রহিল। অন্নপূর্ণ কি একটা হাতে লইয়া সে-পথেই ফিরিয়া যাইতেছিলেন, বিন্দু ভাকিয়া বলিল, দিদি, শোন শোন, খোপা বঁধিবে ? অন্নপূর্ণ ফিরিয়া দাড়াইলেন। ক্ষণকাল নিঃশৰে চাহিয়া সমস্ত ব্যাপারটা বুঝির এলোকেশীকে বলিলেন, আমি কত বলেচি ঠাকুরবি, ওকে বলা মিছে। অত চুল ৰাধবে না, অত কাপড় গয়না তা পরবে না, অত রূপ তা একবার চেয়ে দেখবে না। ওর সব ছিষ্টছাড়া মতিবুদ্ধি। ছেলেও হচ্চে তেমনি। সেদিন অমূল্য কি বললে জানিস ছোটবেী ; বলে aাম-কাপড় পরে কি হয় ? ছোটমারও অত আছে পরে কি ? বিন্দু সগৰ্ব্বে মুখ তুলিয়া হাসিয়া বলিল, তবে দেখ দিদি, ছেলেকে দশের একজন করে তুলতে হলে মায়ের এইরকম ছিষ্টছাড়া মতিবুদ্ধির দরকার কি না ! যদি ততদিন বেঁচে থাক দিদি, তা হলে দেখতে পাবে, দেশের লোকে দেখিয়ে বলবে, ঐ অমূল্যের মা। বলিতে বলিতেই তাহার চোখদুটি সজল হইয়া উঠিল। অন্নপূর্ণ তাহ দেখিতে পাইয়া সম্বেহে বলিলেন, সেইজন্তই ত তোর ছেলের সম্বন্ধে আমরা কোন কথা কইনে। ভগবান তোর মনোবাঞ্ছা পূৰ্ণ করুন, কিন্তু ঐ ছেলে বড় হবে, দশের একজন হবে, অত অাশা আমরা মনেও ঠাই नििर्रश्नं । বিন্দু আচল দিয়া চোখ মুছিরা বলিল, কিন্তু ঐ একটি আশা নিয়ে আমি বেঁচে জাছি দিদি। বাপরে । সহসা তাহার সর্বাঙ্গে কাটা দিয়া উঠিল। সে লজ্জিত ♥ፀ