মাতৃশ্রাদ্ধ
আছেন, মা সত্যের মধ্যে আছেন; শোকানলের আলোকেই এই শ্রদ্ধাকে উজ্জ্বল করে তুলতে হবে যে, মা আছেন, তিনি কখনোই হারাতে পারেন না। সত্যের মধ্যে মা চিরকাল ছিলেন বলেই তাঁকে একদিন পেয়েছি, নইলে একদিনও পেতুম না— এবং সত্যের মধ্যেই মা আছেন বলেই আজও তাঁর অবসান নেই।
সত্যের মধ্যেই, অমৃতের মধ্যেই সমস্ত আছে, এ কথা আমরা পরমাত্মীয়ের মৃত্যুতেই যথার্থত উপলব্ধি করি। যাদের সঙ্গে আমাদের স্নেহপ্রেমের, আমাদের জীবনের গভীর যোগ নেই, তারা আছে কি নেই তাতে আমাদের কিছুই আসে যায় না— সুতরাং, মৃত্যুতে তারা আমাদের কাছে একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। এইখানেই মৃত্যুকে আমরা বিনাশ বলেই জানি।
কিন্তু, এ মৃত্যুর অর্থ কী ভেবে দেখো। যে মানুষকে আনন্দের মধ্যে দেখি নি তাকে অমৃতের মধ্যেই দেখি নি— আমার পক্ষে সে কেবলমাত্র চোখে-দেখা কানে-শোনার অনিত্য লোকেই এতদিন ছিল— যেখানে তাকে সত্যরূপে বৃহৎরূপে অমররূপে দেখতে পেতুম সেখানে সে আমাকে দেখা দেয় নি।
যেখানে আমার প্রেম সেইখানেই আমি নিত্যের স্বাদ পাই, অমৃতের পরিচয় পেয়ে থাকি। সেখানে মানুষের উপর থেকে তুচ্ছতার আবরণ চলে যায়, মানুষের মূল্যের সীমা থাকে না। সেই প্রেমের মধ্যে যে মানুষকে দেখেছি তাকেই আমি অমৃতের মধ্যে দেখেছি। সমস্ত সীমাকে অতিক্রম ক’রে তার মধ্যে অসীমকে দেখতে পাই, এবং মৃত্যুতেও সে আমার কাছে মরে না।
যাকে আমরা ভালোবাসি মৃত্যুতে সে যে থাকবে না এই কথাটা
১২৫