শাস্তিনিকেতন কাছে গিয়েও পৌছে না । সেইজন্যে দানের সম্বন্ধে শাস্ত্রে বলে : শ্রদ্ধয়া দেয়ম্। শ্রদ্ধার সঙ্গে দান করবে। কেননা, মামুষের বাহিরে ভিতরে দুই বিভাগ আছে ; একটা বিভাগে অর্থ এসে পড়ে, আর-একটা বিভাগে শ্রদ্ধা গিয়ে পৌছয়। এইজন্য শ্রদ্ধা যদি না দিই, শুধু টাকাই দিই, তা হলে মানুষের অন্তরাত্মাকে কিছুই দেওয়া হয় না, এমন-কি তাকে অপমানই করা হয়। তেমন দান কখনোই সম্পূর্ণ দান নয়— সুতরাং সে দান সংসারের দান হতে পারে, কিন্তু সে দান ধর্মের দান হতেই পারে না । দান যে আমরা কেবল পরকেই দিয়ে থাকি তা তো নয় । বস্তুত, প্রতি মুহূর্তেই আমরা নিজেকে নিজের কাছে দান করছি— সেই দানের দ্বারাই আমাদের প্রকাশ। সকলেই জানেন, প্রতি মুহূর্তেই আমরা আপনার মধ্যে আপনাকে দাহ করছি— সেই দাহ করাটাই আমাদের প্রাণক্রিয়া । এমনি করে আপনার কাছে আপনাকে সেই আহুতি দান যখনই বন্ধ হয়ে যাবে তখনই প্রাণের আগুন আর জলবে না, জীবনের প্রকাশ শেষ হয়ে যাবে। এইরকম মননক্রিয়াতেও নানাপ্রকার ক্ষয়ের মধ্যে দিয়েই চিন্তাকে জাগাতে হয়। এইজন্যে নিজের প্রকাশকে জাগ্রত রাখতে আমরা অহরহ আপনার মধ্যে আপনার একটি যজ্ঞ করে আপনাকে যত পারছি ততই দান করছি । সেই দানের সম্পূর্ণতার উপরেই আমাদের প্রকাশের সম্পূর্ণতা। বাতি আপনাকে আপনি যে পরিমাণে দান করবে সেই পরিমাণে তার আলোক উজ্জল হয়ে উঠৰে । যে পরিমাণে নিজের প্রতি তার দানের উপকরণ বিশুদ্ধ হবে সেই পরিমাণে তার শিখ ধূমশূন্ত হতে থাকবে। নিজের প্রকাশযজ্ঞে আমাদের যে নিরস্তর দান সে সম্বন্ধেও abb*
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৯
অবয়ব