বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন আমি-বোধটা একেবারে অস্থিমজ্জায় জড়িয়ে গেছে ; সে যদি বড়ো দুঃখ দেয় তবু তাকে অন্যমনস্ক হয়েও চেপে ধরি, তাকে ভুলতে ইচ্ছ। করলেও ভুলতে পারি নে। সেইজন্যেই আমাদের প্রতিদিনের প্রার্থন এই যে : পিতা নো বোধি । তুমি যে পিতা, তুমি যে আছ, এই সত্যের বোধে আমার সমস্ত জীবনকে পূর্ণ করে দাও। পিতা নো বোধি । পিতার বোধ দিয়ে আমার সমস্তকে সমস্তটা ভরে তোলো, কিছুই আর বাকি না থাক । আমার প্রত্যেক নিশ্বাস প্রশ্বাস পিতার বোধ নিয়ে আমার সর্বশরীরে প্রাণের আনন্দ তরঙ্গিত করে তুলুক, আমার সর্বাঙ্গের স্পৰ্শচেতনা পিতার বোধে পুলকিত হয়ে উঠুক। পিতার বোধের আলোক আমার দুই চক্ষুকে অভিষিক্ত করে দিক ! পিতা নো বোধি। আমার জীবনের সমস্ত সুখকে পিতার বোধে বিনম্র করে দিক, আমার জীবনের সমস্ত দুঃখকে পিতার বোধ করুণাবর্ষণে সফল করে তুলুক ! আমার ব্যথা, আমার লজ্জা, আমার দৈন্য, সকলের সঙ্গে আমার সমস্ত বিরোধ, পিতার বোধের অসীমতার মধ্যে একেবারে ভাসিয়ে দিই } এই বোধ প্রতিদিন প্রসারিত হতে থাক— নিকট হতে দূরে, দূর হতে দূরান্তরে, আত্মীয় হতে পরে, মিত্র হতে শক্রতে, সম্পদ হতে বিপদে, জীবন হতে মৃত্যুতে— প্রসারিত হতে থাকৃ— প্রিয় হতে অপ্রিয়ে, লাভ হতে ত্যাগে, আমার ইচ্ছা হতে তোমার ইচ্ছায় । প্রতিদিন মন্ত্র পড়ে গিয়েছি : পিতা নো বোধি । কিন্তু, একবারও মনেও আনি নি কত বড়ে চাওয়া চাচ্ছি ; মনেও আনি নি এই প্রার্থনাকে যদি সত্য করে তুলতে চাই তবে জীবনের সাধনাকে কত বড়ো সাধনা করতে হবে । কত ত্যাগ, কত ক্ষমা, কত পাপের স্বালন, 总公8