শান্তিনিকেতন বাধাহীন করে লাভ করি যে, আমার অস্তিত্ব এ কেবলমাত্রই সন্তানের অস্তিত্ব ; আমি তো আর-কারও নই, আর-কিছুই নই, তোমার সস্তান এই আমার একটিমাত্র সত্য ; এই সস্তানের অস্তিত্বকে ঘিরে ঘিরে অস্তরে বাহিরে যা-কিছু আছে এ-সমস্তই পিতার আনন্দ ছাড়া আর কিছুই নয়— এই জল-স্থল-আকাশ, এই জন্মমৃত্যুর জীবনকাব্য, এই সুখদুঃখের সংসারলীলা, এ-সমস্তই সন্তানের জীবনকে আলিঙ্গন করে ধরছে । এইবার কেবল আমার দিকের দরকার আমার সমস্ত প্রাণটা ‘পিতা’ বলে সাড়া দিয়ে উঠুক। উপরের ডাকের সঙ্গে নীচের ডাকটি মিলে যাক, আমার দিক থেকে কেবল এইটেই বাকি আছে। তোমার দিক থেকে একেবারে জগৎ ভরে উঠল— তুমি আপনাকে দিয়ে আর শেষ করতে পারলে না— পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ একেবারে ছাপিয়ে পড়ে যাচ্ছে— কিন্তু, তোমার এই এত বড়ো আকাশ-ভরা আত্মদান আমরা দেখতেই পাচ্ছি নে, গ্রহণ করতেই পারছি নে— কিসের জন্যে ? ওই এতটুকু একটুখানি আমির জন্যে । সে যে সমস্ত অনন্তের দিকে পিঠ ফিরিয়ে বলছে ‘আমি ! একবার একটুখানি থাম! একবার আমার জীবনের সব চেয়ে সত্য বলাটা বলতে দে– একবার সন্তানজন্মের চরম ডাকটা ডাকতে দে : পিতা নোহসি । পিতা, পিতা, পিতা— তুমি, তুমি, তুমি— কেবল এই কথাটা— অন্ধকারে আলোতে নিৰ্ভয়ে গলা খুলে কেবল— আছ, আছ, আছ ! আমি’ তার সমস্ত বোঝাস্বদ্ধ একেবারে তলিয়ে যাক সেই অতলস্পর্শ সত্যে যেখানে তুমি তোমার সস্তানকে আপনার পরিপূর্ণ আনন্দে আবৃত করে জানছ । তেমনি করে সস্তানকেও জানতে দাও তার পিতাকে । তোমার জানা এবং তার জানার মাঝখানকার বাধাটা একেবারে ঘুচে ఫిసెతి
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৭
অবয়ব