শাস্তিনিকেতন আপনাকে দিয়ে সমুদ্রকে এসে নমস্কার করে, সেই নমস্কারটিতেই তার সমস্ত পথযাত্রা একেবারে নিঃশেষে সার্থক, হে পিতা, তেমনি করে একটি পরিপূর্ণ নমস্কারে তোমার মধ্যে আপনাকে যেন শেষ করে দিতে পারি । এই-যে আমার বাহিরের মানুষটা, এই আমার সংসারের মাহুষটা, জন্ম ও মৃত্যুর মাঝখানকার অতিক্ষুদ্র এই মানুষটা, এ কেবল মাথাটাকে সকলের চেয়ে উচুতে তুলে বুক ফুলিয়ে বেড়াতে চায়। সকলের চেয়ে আমি তফাত থাকব, সকলের চেয়ে আমি বড়ো হব, এতেই তার সকলের চেয়ে স্থখ । তার একমাত্র কারণ এই, আপনার মধ্যে তার আপনার স্থিতি নেই। বাইরের বিষয়ের উপরেই তার স্থিতি— যত জিনিস বাড়ে ততই সে বাড়ে। নিজের মধ্যে সে শূন্ত, সেখানে তার কোনো সম্পদ নেই, এইজন্য বাইরে ধন যত জমে ততই সে ধনী হয় । জিনিসপত্র নিয়েই যাকে বড়ো হতে হয় সে তো সকলের সঙ্গে মিলতে পারে না । জিনিসপত্র তো জ্ঞান নয়, প্রেম নয়— সকলকে দান করার দ্বারাই তো সে আরও বাড়ে না ; ভাগ করার দ্বারাই তো সে আরও ঘনীভূত হয়ে উঠে না ; তার থেকে যা যায় তা যায়, সে তো আরও দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসে না ; তার যা অামার তা আমার, যা অন্তের তা অন্যেরই। এইজন্যে যে মানুষটা উপকরণ নিয়েই বড়ো হয় সকলের থেকে তফাত হয়েই সে বড়ো হয় ; আপনার সম্পদকে সকলের সঙ্গে মেলাতে গেলেই তার ক্ষতি হতে থাকে। এইজন্তে যতই সে বড়ো হয় ততই তার আমিটাই উচু হয়ে উঠতে থাকে, ততই চারি দিকের সঙ্গে তার যোগ বিচ্ছিন্ন হতে থাকে, এবং তার সমস্ত সুখই অহংকারের রূপ ধারণ করে অন্য সকলকে অবনত করতে চায়। এমনি করে বিশ্বের সঙ্গে বিরোধের দ্বারাই সে যে দুঃসহ তাপের স্বষ্টি করে Robo
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৯
অবয়ব