বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিতার বোধ করে জানা ; তা হলেই সে আপনাকে সত্য জানতে পারে। সেই সত্য জানা থেকে বঞ্চিত হলেই সে মুহমান হয়ে, অপবিত্র হয়ে জগতে বাস করে। আপনাকে সত্যরূপে জানবার জন্যেই, সমাজসংস্কারের সংকীর্ণ জালের মধ্যে নিজেকে নিত্যকাল জড়িত করে রাখবার দীনতা হতে উদ্ধার পাবার জন্যেই, সে ডাকছে তার পিতাকে— সে ডাকছে নিখিল মানুষের পিতাকে । সেই তার পিতার বোধের মধ্যেই তার আপনার বোধ সত্য হবে, তার বিশ্বের সম্বন্ধ সম্পূর্ণ হবে। এ ডাক সমাজের ডাক নয়, সম্প্রদায়ের ডাক নয় ; এ ডাক অন্তরাত্মার ডাক । এ ডাক কুলশীলের ডাক নয়, মানসন্ত্রমের ডাক নয়, এ ডাক সস্তানের ডাক । এই একটিমাত্র ডাকেই সকল সস্তানের কণ্ঠ এক স্বরে মেলে, এই ‘পিতা নোহসি । তাই এ ডাকের সঙ্গে কোনো অহংকার কোনো সংস্কারকে মেলাতে গেলেই এই পরম সংগীতকে এক মুহূর্তেই বেস্বরে করা হবে— তাতে আত্মা পীড়িত হবে এবং হে পরমাত্মন, তাতে তোমাকেই বেদনা দেওয়া হবে যে তুমি সকল সস্তানের ব্যথার ব্যর্থী। তাই তোমার কাছে অন্তরের এই অন্তরতম প্রার্থনা— যেন নত হই, নত হই। সেই নতি দীনতার নতি নয়, সে যে পরম পরিপূর্ণতার প্ৰণতি । তোমার কাছে সেই একান্ত নমস্কার আত্মসমর্পণের পরমৈশ্বর্য। আমাদের সেই নমস্কার সত্য হোক, সত্য হোক— অহং শাস্ত হোক, অহংকার ক্ষয় হোক, ভেদবুদ্ধি দূর হোক, পিতার বোধ পূর্ণ হোক এবং বিশ্বভুবনে সস্তানের প্রণামের সঙ্গে পিতার বিগলিত আনন্দধারা সম্মিলিত হোক | নমস্তেহস্তু – সকল দেহ লুটিয়ে পড়ুক তোমার এ সংসারে একটি নমস্কারে প্রভু, একটি নমস্কারে । \రిo\లి