স্বাক্টর অধিকার যাবে । এই আলো চোখের উপর মিলিয়ে যাবে। সংসার তার দরজা বন্ধ করে দেবে, তার বাইরে পড়ে থাকব । তার আগে কি বলে যেতে পারব না কিছু দিতে পেরেছি ? আমাদের স্বষ্টি করবার ভার যে স্বয়ং তিনি দিয়েছেন । তিনি যে নিজে সুন্দর হয়ে জগৎকে স্বন্দর করে সাজিয়েছেন, এ নিয়ে তো মানুষ খুশি হয়ে চুপ করে থাকতে পারল না। সে বললে, আমি ওই স্বষ্টিতে আরও কিছু স্বষ্টি করব। শিল্পী কী করে ? সে কেন শিল্প রচনা করে ? বিধাতা বলেছেন, ‘আমি এই-যে উৎসবের লণ্ঠন সব আকাশে ঝুলিয়ে দিয়েছি, তুমি কি আল্পনা অঁাকবে না ? আমার রশুনচোঁকি তো বাজছেই– তোমার তমুর, কি একতারাই নাহয়, তুমি বাজাবে না ? সে বললে, “হা, বাজাব বই কি ? গায়কের গানে আর বিশ্বের প্রাণে যেমনি মিলল অমনি ঠিক গানটি হল। আমি গান স্বষ্টি করব বলে সেই গান তিনি শোনবার জন্যে আপনি এসেছেন। তিনি খুশি হয়েছেন— মানুষের মধ্যে তিনি যে আনন্দ দিয়েছেন, প্রেম দিয়েছেন, তা যে মিলল তার সব আনন্দের সঙ্গে, এই দেখে তিনি খুশি । শিল্পী আমাদের মানুষের সভায় কি তার শিল্প দেখাতে এসেছে ? সে যে তারই সভায় তার শিল্প দেখাচ্ছে, তার গান শোনাচ্ছে । তিনি বললেন, ‘বা’, এ যে দেখছি আমার স্বর শিখেছে ! তাতে আবার আধোআধো বাণী জুড়ে দিয়েছে— সেই বাণীর আধখানা ফোটে, আধখানা ফোটে না।’ তার সুরে সেই আধফোটা সুর মিলিয়েছি শুনে তিনি বললেন, ‘খুশি হয়েছি।’ এই-যে র্তার মুখের খুশি— না দেখতে পেলে সে শিল্পী নয়, সে কবি নয়, সে গায়ক নয়। যে মানুষের সভায় দাড়িয়ে মানুষ কবে জয়মাল্য দেবে এই অপেক্ষায় বসে আছে সে কিছুই নয়। \OS X
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২২
অবয়ব