ছোটো ও বড়ো প্রকাশ করবার চেষ্টা করছে যে ‘আমার সত্য প্রতিষ্ঠা আছে এবং সে প্রতিষ্ঠা এইটুকুর মধ্যে নয় । সেইজন্যে আমরা যাকে দেখলুম না, র্যাকে প্রত্যক্ষ প্রমাণ করলুম। ন, র্যাকে সংসারবুদ্ধিটুকুর বেড়া দিয়ে ঘের দিয়ে রাখলুম না, তার দিকে মুখ তুলে যারা বললেন তিদেতৎ প্রেয়ঃ পুত্রাং প্রেয়ো বিত্তাং প্রেয়োহন্তস্মাৎ সর্বস্মাৎ’— এই তিনি পুত্র হতে প্রিয়, বিত্ত হতেও প্রিয়, অন্য সব-কিছু হতেও প্রিয়— তাদের সেই বাণীকে আমাদের জীবনের ব্যবহারে সম্পূর্ণ গ্রহণ করতে না পেরেও আজ পর্যন্ত অগ্রাহ করতে পারলুম না। এইজন্যে যখন আমরা তার ভক্তকে দেখলুম তিনি কোন অস্তহীনের প্রেমে জীবনের প্রতি মুহূর্তকে মধুময় করে বিকশিত করছেন, যখন তার সেবককে দেখলুম তিনি বিশ্বের কল্যাণে প্রাণকে তুচ্ছ এবং দুঃখ-অপমানকে গলার হার করে তুলছেন, তখন তাদের প্রণাম করে আমরা বললুম, এইবার মানুষকে দেখা গেল। সমস্ত বৈষয়িকতা সমস্ত দ্বেষবিদ্বেষ-ভাগবিভাগের মাঝখানে এইটি ঘটছে— কিছুতেই এটিকে আর চাপা দিতে পারলে না। মানুষের মধ্যে এই-যে অনন্তের বিশ্বাস, এই-যে অমৃতের আশ্বাসটি বীজের মতো রয়েছে, বারম্বার দলিত বিদলিত হয়েও সে মরল না। এ যদি শুধু তর্কের সামগ্ৰী হত তবে তর্কের আঘাতে আঘাতে চূর্ণ হয়ে যেত ; কিন্তু এ যে মর্মের জিনিস, মানুষের সমস্ত প্রাণের কেন্দ্রস্থল থেকে এ যে অনির্বচনীয়রূপে আপনাকে প্রকাশ করে । তাই তো ইতিহাসে দেখা গেছে মানুষের চিত্তক্ষেত্রে এক-একবার শত বৎসরের অনাবৃষ্টি ঘটেছে, অবিশ্বাসের কঠিনতায় তার অনন্তের চেতনাকে আবৃত করে দিয়েছে, ভক্তির রসসঞ্চয় শুকিয়ে গেছে, x4ט\
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৬
অবয়ব