শান্তিনিকেতন যেখানে পূজার সংগীত বেজে উঠত সেখানে উপহাসের অট্টহাস্য জেগে উঠছে— শত বৎসরের পরে আবার বৃষ্টি নেমেছে— মানুষ বিস্মিত হয়ে দেখেছে সেই মৃত্যুহীন বীজ আবার নূতন তেজে অঙ্কুরিত হয়ে উঠেছে । মাঝে মাঝে যে শুষ্কতার ঋতু আসে তারও প্রয়োজন আছে। কেননা, বিশ্বাসের প্রচুর রস পেয়ে যখন বিস্তর আগাছা কাটাগাছ জন্মায়, যখন তারা আমাদের ফসলের সমস্ত জায়গাটি ঘন করে জুড়ে বসে আমাদের চলবার পথটি রোধ করে দেয়, যখন তারা কেবল আমাদের বাতাসকে বিষাক্ত করে কিন্তু আমাদের কোনো খাদ্য জোগায় না, তখন খর রৌদ্রের দিনই শুভদিন— তখন অবিশ্বাসের তাপে যা মরবার তা শুকিয়ে মরে যায়, কিন্তু যার প্রাণ আমাদের প্রাণের মধ্যে সে মরবে তখনই যখন আমরা মরব । যতদিন আমরা আছি ততদিন আমাদের আত্মার খাদ্য আমাদের সংগ্রহ করতেই হবে— মানুষ আত্মহত্যা করবে না । এই-যে মানুষের মধ্যে একটি অমৃতলোক আছে, যেখানে তার চিরদিনের সমস্ত সংগীত বেজে উঠছে, আজ আমাদের উৎসব সেইখানকার। এই উৎসবের দিনটি কি আমাদের প্রতিদিন হতে স্বতন্ত্র ? এই-যে অতিথি আজ গলায় মালা পরে মাথায় মুকুট নিয়ে এসেছে, এ কি আমাদের প্রতিদিনের আত্মীয় নয় ? আমাদের প্রতিদিনেরই পর্দার আড়ালে আমাদের উৎসবের দিনটি বাস করছে । আমাদের দৈনিক জীবনের মধ্যে অস্তঃসলিলা হয়ে একটি চিরজীবনের ধারা বয়ে চলেছে, সে আমাদের প্রতিদিনকে অস্তরে অস্তরে রসদান করতে করতে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে ; সে \రి)ు,
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৭
অবয়ব