বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছোটো ও বড়ো ভিতর থেকে আমাদের সমস্ত-চেষ্টাকে উদার করছে, সমস্ত ত্যাগকে স্বন্দর করছে, সমস্ত প্রেমকে সার্থক করছে। আমাদের সেই প্রতিদিনের অস্তরের রসস্বরূপকে আজ আমরা প্রত্যক্ষরূপে বরণ করব বলেই এই উৎসব— এ আমাদের জীবনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন নয় । সম্বৎসরকাল গাছ আপনার পাতার ভার নিয়েই তো আছে ; বসন্তের হাওয়ায় একদিন তার ফুল ফুটে ওঠে, সেইদিন তার ফলের খবরটি প্রকাশ হয়ে পড়ে । সেইদিন বোঝা যায় এতদিনকণর পাতা ধরা এবং পাতা ঝরার ভিতরে এই সফলতার প্রবাহটি বরাবর চলে আসছিল— সেইজন্যেই ফুলের উৎসব দেখা দিল, গাছের অমরতার পরিচয় স্বন্দর বেশে প্রচুর ঐশ্বর্যে আপনাকে প্রকাশ করল। আমাদের হৃদয়ের মধ্যে সেই পরমোৎসবের ফুল কি আজ ধরেছে, তার গন্ধ কি আমরা অস্তরের মধ্যে আজ পেয়েছি ? আজ কি অন্য সব ভাবনার আড়াল থেকে এই কথাটি আমাদের কাছে স্পষ্ট করে দেখা দিল যে জীবনটা কেবল প্রাত্যহিক প্রয়োজনের কর্মজাল বুনে বুনে চলা নয়— তার গভীরতার ভিতর থেকে একটি পরম সৌন্দর্য পরমকল্যাণ পূজার অঞ্জলির মতো উর্ধ্বমুখ হয়ে উঠছে ? | না, সে কথা তো আমরা সকলে মানি নে আমাদের জীবনের মর্মনিহিত সেই সত্যকে সুন্দরকে দেখবার দিন এখনও হয়তো আসে নি। আপনাকে একেবারে ভুলিয়ে দেয়, সমস্ত স্বার্থকে পরমার্থের মধ্যে মিলিয়ে তোলে, এমন বৃহৎ আনন্দের হিল্লোল অস্তরের মধ্যে জাগে নি । কিন্তু, তবুও তিনশো পয়ষট্টি দিনের মধ্যে অন্তত একটি দিনকেও আমরা পৃথক করে রাখি, আমাদের সমস্ত, অন্তমনস্কতার মাঝখানেই আমাদের পূজার প্রদীপটি জালি, আসনটি পাতি, সঙ্কলকে ৩১৭