বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন পারে-- পিতা, মাতা, বন্ধু— সেখান থেকে সমস্ত চিত্তকে প্রত্যাখ্যান করে যখন আমরা অনস্তকে ছোটো করে আপন হাতে আপনার মতো করে গড়েছি তখন কী যে করেছি তা কি ইতিহাসের দিকে ভাকিয়ে স্পষ্ট করে একবার দেখব না ? যখন আমরা বলেছি আমাদের পরম ধনকে সহজ করবার জন্তে ছোটো করব তখনই আমাদের পরমার্থকে নষ্ট করেছি ; তখন টুকরো কেবলই হাজার টুকরো হবার দিকে গেছে, কোথাও সে আর থামতে চায় নি ; কল্পনা কোনো বাধা না পেয়ে উচ্ছম্বল হয়ে উঠেছে, কৃত্রিম বিভীষিকায় সংসারকে কণ্টকিত করে তুলেছে ; বীভৎস প্রথা ও নিষ্ঠুর আচার সহজেই ধর্মসাধনা ও সমাজব্যবস্থার মধ্যে আপনার স্থান করে নিয়েছে। অামাদের বুদ্ধি অস্ত:পুরচারিণী ভীরু রমণীর মতো স্বাধীন বিচারের প্রশস্ত রাজপথে বেরোতে কেবলই ভয় পেয়েছে। এই কথাটি আমাদের বুঝতে হবে যে, অসীমের অভিমুখে আমাদের চলবার পন্থাটি মুক্ত না রাখলে নয় ; থামার সীমাই হচ্ছে আমাদের মৃত্যু, আরো’র পরে আরো’ই হচ্ছে আমাদের প্রাণ। সেই আমাদের ভূমার দিকটি জড়তার দিক নয়, সহজের দিক নয়, সে দিক অন্ধ অমুসরণের দিক নয়, সেই দিক নিয়ত সাধনার দিক । সেই মুক্তির দিককে মানুষ যদি আপন কল্পনার বেড়। দিয়ে ঘিরে ফেলে, আপনার দুর্বলতাকেই লালন করে ও শক্তিকে অবমানিত করে, তবে তার বিনাশের দিন উপস্থিত হয় । w ' এমনি করে মানুষ যখন সহজ করবার জন্যে আপনার পূজাকে ছোটো করতে গিয়ে পূজনীয়কে একপ্রকার বাদ দিয়ে বসে, তখন পুনশ্চ সে এই দুৰ্গতি থেকে আপনাকে বাচাবার ব্যগ্রতায় অনেক সময় আর-এক বিপদে গিয়ে পড়ে— আপন পূজনীয়কে এতই দূরে নিয়ে ૭૨૬