শান্তিনিকেতন একদিন বৃদ্ধ করে তাকে ছেড়ে দেয় । প্রভাতের শুভ্র নির্মলতা নিয়ে সে আরম্ভ করে, তার পরে তার উপর কালের প্রলেপ দিতে দিতে তাকে নিশীথরাত্রের কালিমায় হারিয়ে ফেলে। অথচ এই জরার হাত থেকে মানুষকে তো রক্ষা পেতে হবে । কেমন করে পাবে, কোথায় পাবে ? যেখানে চিরপ্রাণ সেইখানে পাবে। সে প্রাণের লীলার ধারা তো এক স্বত্রের ধারা নয়। দেখো-না কেন, রাত্রির পরে দিন নতুন নতুন পুষ্পে পুষ্পিত হয়ে প্রকাশ পাচ্ছে । দিনাস্তে নিশীথের তারা নতুন করেই আপনার দীপ জালাচ্ছে। মৃত্যুর স্থত্রে প্রাণের মালাকর অমনি করে জীবনের ফুলকে নবীন করে গেথে তুলছেন। কিন্তু, সংসার একটানা মৃত্যুকে ধরে রেখেছে। সে সব জিনিসকে কেবলই ক্ষয় করতে করতে সেই অতল গহবরে নিয়ে গিয়ে ফেলে। কিন্তু, এই একটানা মৃত্যুর ধারা যদি চরম সত্য হত তবে তো কিছুই নতুন হয়ে উঠত না, তবে তো এতদিনে পৃথিবী পচে উঠত, তবে জরার মূর্তিই সব জায়গায় প্রকাশ পেত। সেইজন্য মানুষ উৎসবের দিনে বলে, “আমি এই মৃত্যুর ধারাকে মানব না, আমি অমৃতকে চাই।’ এ কথাও মানুষ বলেছে, ‘অমৃতকে আমি দেখেছি, আমি পেয়েছি । সমস্তই বেঁচে আছে অমৃতে ।” মৃত্যুর সাক্ষ্য চারি দিকে, অথচ মানুষ বলে উঠেছে, ওগো শোনে, তোমরা অমৃতের পুত্র, তোমরা মৃত্যুর পুত্র নও ’— শৃশ্বস্তু বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রাঃ আ ধে ধামানি দিব্যানি তস্থঃ বেদাহমেতং পুরুষং মহাস্তম্। - ‘আমি তাকে জেনেছি? এই বার্তা র্যারা বলেছেন তারা সে কথা \988
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫৩
অবয়ব