শাস্তিনিকেতন অভাব দেখতে পাব। যদি পাই তবে সেই অন্তরের অভাবকে বাইরের কী দিয়েই বা ঢাকা দেব ! যারা শহরে থাকে তাদের সাজসরঞ্জামের অভাব নেই, তাই দিয়েই তারা তাদের উৎসবের মানরক্ষা করতে পারে। আমাদের এখানে সে-সমস্ত উদযোগের পথ বন্ধ । কিন্তু, ভয় নেই। প্রতিদিনই আমাদের আশ্রমের উৎসবের বায়না দেওয়া গেছে । এখানকার শালবনে পাখির বাসায়, এখানকার প্রাস্তরের আকাশে বাতাসের খেলার প্রাঙ্গণে, প্রতিদিনই আমাদের উৎসবের সুর কিছুনা-কিছু জমেছে। কিন্তু, প্রতিদিনের অন্যমনস্কতায় সেই রোশুনচৌকি ভালো করে প্রাণে পৌছয় নি। আজ আমাদের অভ্যাসের জড়তাকে ঠেলে দিয়ে একবার মন দিতে পারলেই হয়, আর কিছু বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হবে না। চিত্তকে শাস্ত করে বসি ; অঞ্জলি করে হাত পাতি, তা হলে মধুবনের মধুফল আপনিই হাতে এসে পড়বে। যে আয়োজন চারি দিকে আপনিই হয়ে আছে তাকেই ভোগ করাই যে আমাদের উৎসব। প্রতিদিন ডাকি নি বলেই র্যাকে দেখি নি আজ মনের সঙ্গে ভাক দিলেই যে তাকে দেখতে পাব । বাইরের উত্তেজনায় ধাক্কা দিয়ে মনকে চেতিয়ে তোলা, তাতে আমাদের দরকার নেই । কেননা, তাতে লাভ নেই, বরঞ্চ শক্তির ক্ষয় হয়। গাছের ভিতরের রসে যখন বসন্তের নাড়া পায় তখনই ফুল ফোটে, সেই ফুলই সত্য । বাইরের উত্তেজনায় যে ক্ষণিক মোহ আনে সে কেবল মরীচিকা ; তাতে যেন না ভুলি। আমাদের ভিতরকার শক্তিকে উদবোধিত করি । ক্ষণকালের জন্যেও যদি তার সাড়া পাই তখন তার সার্থকতা চিরদিনের । যদি মুহূর্তের জন্যও আমরা সত্য হতে পারি তবে সে সত্য কোনোদিন মরবে না ; সেই অমৃতবীজ চিরকালের মতো আমাদের চিরজীবনের ..Yor'e
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯১
অবয়ব