বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতীক্ষা কিন্তু, যিনি রাজার রাজা তার কোনো আয়োজন নেই। তাকে যে ভুলে থাকে সে থাকুক, র্তার কোনো তাগিদই নেই। যার মনে পড়ে, যখন মনে পড়ে, সেই তার পূজা করুক— এইটুকু মাত্র তার পাওনা। কেননা, তার কাছে কোনো ভয় নেই । বিশ্বের আর-সব নিয়ম ভয়ে ভয়ে মানতে হয় । আগুনে হাত দিতে ভয় পাই, কেননা, জানি যে হাত পুড়বেই। কিন্তু, কেবল তার সঙ্গে ব্যবহারে কোনো ভয় নেই ; তিনি বলেছেন, “আমাকে ভয় না করলেও তোমার কোনো ক্ষতি নেই।” এই-যে আজ এত লোকসমাগম হয়েছে, কে তার চিত্তকে স্থির করেছে ! তিনি কি দেখছেন না আমাদের চিত্ত কত বিক্ষিপ্ত ! কিন্তু, তার শাসন নেই। র্যাদের পদমর্যাদা আছে, রাজপুরুষদের কাছে সম্মান আছে, এমন লোক আজ এখানে এসেছেন । যারা জ্ঞানের অভিমানে মত্ত হয়ে তাকে বিশ্বাস করেন না এমন লোক এখানে উপস্থিত আছেন । কিন্তু, তার বসুন্ধরার ধৈর্য র্তাদের ধারণ করে রয়েছে, আকাশের জ্যোতির এক কণাও তাদের জন্য কমে নি— সব ঠিক সমান রয়েছে। র্তার এই ইচ্ছা যে, তিনি আমাদের কাছ থেকে জোর করে কিছু নেবেন না। তার প্রহরীদের কত ঘুষ দিচ্ছি, তারা কত শাসন করছে, কিন্তু বিশ্বমন্দিরের সেই দেবতা একটি কথাও বলেন না । মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে আসছে আর আমাদের মনে ভয় জেগে উঠছে যে, পরকালে গিয়ে বুঝি এখানকার কাজের হিসাব দিতে হবে । না, সে ভয় একেবারেই সত্য নয়। তিনি যে কোনোদিন আমাদের শাস্তি দেবেন তা নয়। তিনি এমনি করে অপেক্ষা করে থাকবেন । তিনি কুঁড়ির দিকে চোখ মেলে থাকবেন কবে সেই কুঁড়ি ফুটবে। যতক্ষণ কুঁড়ি না ফুটছে ততক্ষণ র্তার পূজার অর্ঘ্য ভরছে "za