মা মা হিংসীঃ কোনো লাভ নেই। সে জানে মৃত্যুর চেয়ে স্থনিশ্চিত সত্য আর নেই, দৈহিক জীবনের বিনাশ একদিন-না-একদিন ঘটবেই। এ বিষয়ে তার মনে কোনো সন্দেহ নেই । কিন্তু, সে যখন বলেছে ‘আমাকে বিনাশ কোরো না, তখন সে যে কী বলতে চেয়েছে তা তার অস্তরের দিকে চেয়ে দেখলেই বেশ বোঝা যায়। এমন যদি হত যে তার শরীর চিরকাল বঁাচত, তা হলেও সেই বিনাশ থেকে তাকে কেউ রক্ষা করতে পারত না । কারণ, সে যে প্রতি মুহূর্তের বিনাশ । সে যে কত রকমের মৃত্যু, একটার পর একটা আমাদের জীবনের উপরে আসছে। ক্ষুদ্র কালে বদ্ধ হয়ে বাইরের মুখদুঃখের আঘাতে ক্রমাগত খণ্ডিত বিক্ষিপ্ত হয়ে যে জীবন আমরা বহন করছি এতে যে প্রতিদিনই আমরা মরছি । যে গণ্ডি দিয়ে আমরা জীবনকে ঘিরে রাখতে চেষ্টা করি তারই মধ্যে জীবন কত মরা মরছে— কত প্রেম কত বন্ধুত্ব মরছে— কত ইচ্ছা কত আশা মরছে— এই ক্রমাগত মৃত্যুর আঘাতে সমস্ত জীবন ব্যথিত হয়ে উঠেছে । * জীবনের মধ্যে এই মৃত্যুর ব্যথা যে আমাদের ভোগ করতে হয় তার কারণ হচ্ছে আমরা দুই জায়গায় আছি । আমরা তার মধ্যেও আছি, সংসারের মধ্যেও আছি । আমাদের এক দিকে অনন্ত, অন্য দিকে সাস্ত । সেইজন্য মানুষ এই কথাই ভাবছে, কী করলে এই দুই দিককেই সে সত্য করতে পারে। আমাদের এই সংসারের পিতা, যিনি এই পার্থিব জীবনের স্বত্রপাত করে দিয়েছেন, তাকে শুধু পিতা বলে আমাদের অন্তরের তৃপ্তি নেই। কারণ, আমরা যে জানি যে, এই শারীরিক জীবন একদিন ফুরিয়ে যারে। আমরা তাই সেই আর \లి))
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১০
অবয়ব