মা মা হিংসীঃ করেছে; তাই সে ব্রহ্মাস্ত্র আজ তারই বুকে বেজেছে। মানুষের বক্ষ বিদীর্ণ করে আজ রক্তের ধারা পৃথিবীতে প্রবাহিত হয়ে চলবে— আজ কে মানুষকে বাচাবে । এই পাপ, এই হিংসা মানুষকে আজ কী প্রচণ্ড মার মারবে— তাকে এর মার থেকে কে বাচাবে ! আমরা আজ এই পাপের মূর্তি যে কী প্রকাও তা কি দেখব না ? এই পাপ যে সমস্ত মানুষের মধ্যে রয়েছে এবং আজ তাই এক জায়গায় পুঞ্জীভূত হয়ে বিরাট আকার নিয়ে দেখা দিয়েছে, এ কথা কি আমরা বুঝব না! আমরা এ দেশে প্রতিদিন পরস্পরকে আঘাত করছি,মাহুষকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছি, স্বার্থকে একান্ত করে তুলছি। এ পাপ কত দিন ধরে জমছে, কত যুগ ধরে জমছে ! প্রতিদিনই কি আমরা তারই মার খাচ্ছি নে ? বহু শতাব্দী থেকে আমরা কি কেবলই মরছি নে ? সেইজন্যই তো এই প্রার্থনা : মা মা হিংসীঃ । বাচাও বঁাচাও, এই বিনাশের হাত থেকে বাচাও । এই-সমস্ত দুঃখশোকের উপরে যে অশোক লোক রয়েছে, অনন্ত-অস্তের সম্মিলনে যে অমৃতলোক স্বই হয়েছে, সেইখানে নিয়ে যাও । সেইখানে মরণের উপরে জয়ী হয়ে আমরা বাচব ; ত্যাগের দ্বারা, দুঃখের দ্বারা বাচব। সেইখানে আমাদের মুক্তি দাও । আজ অপ্রেমঝঞ্চার মধ্যে, রক্তস্রোতের মধ্যে, এই বাণী সমস্ত মানুষের ক্ৰন্দনধ্বনির মধ্যে জেগে উঠেছে। এই বাণী হাহাকার করতে করতে আকাশকে বিদীর্ণ করে বয়ে চলেছে । সমস্ত মানবজাতিকে বঁাচাও ! আমাকে বাচাও ! এই বাণী যুদ্ধের গর্জনের মধ্যে মুখরিত হয়ে আকাশকে বিদীর্ণ করে দিয়েছে। স্বার্থের বন্ধনে জর্জর হয়ে, রিপুর আঘাতে আহত হয়ে, এই-ষে 8 ov)
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১৪
অবয়ব