স্বাক্টর ক্রিয়া ষে শাস্তং শিবং অদ্বৈতম রয়েছেন— তিনি সত্য, তিনি আমার ভিতরে সত্য, তিনি জগতে সত্য। দেখি কোনখানে বাধছে— কোনখানে জগতের মধ্যে যিনি শাস্তং শিবং অদ্বৈতম তার শাস্তিতে আমি ব্যাঘাত করছি। এ প্রত্যেককে আলাদা করে নিজের ভিতরে দেখতে হবে । কারণ, প্রত্যেকের জীবনের সমস্যা স্বতন্ত্র । কার কোনখানে দীনতা ও কৃপণতা তা তো আমরা জানি না। এই মন্দিরে আমাদের যেমন সম্মিলিত উপাসনা হচ্ছে তেমনি আমাদের প্রত্যেকের স্বতন্ত্র সাধনা এইখানেই জেগে উঠুক। একবার আমাদের চিত্তকে চিন্তাকে গভীর করে অস্তরের মধ্যে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন । আমরা একবার দেখবার চেষ্টা করি, এই আশ্রমের মধ্যে যে সত্যসাধনা রয়েছে সেটি কী। আর, একবার মনকে দিয়ে বলিয়ে নিই ; পিতা নোহসি । পিতা নো বোধি। এ যে কত বড়ো বোধ ! সেই বোধের দ্বারা আমাদের দৃষ্টির কলুষ, আমাদের বুদ্ধির জড়ত, আমাদের চৈতন্তের সংকীর্ণতা দূর হয়ে যাক । এ তো কোনো উপদেশের দ্বারা হবার জো নেই। যেমন করে ছোটো অঙ্গার থেকে বৃহৎ অগ্নি জলে উঠতে পারে, তেমনি করে এই ছোটো কথাটি থেকে বোধের অগ্নি জলে উঠুক— দগ্ধ হোক সকল মলিনতা ও সংকীর্ণতা । যদি সমস্ত ইচ্ছাকে জাগ্রত করে আমরা এই সত্যকে গ্রহণ করি তবেই এই বোধ উদবোধিত হবে। যদি না করি তবে হবে না। মিথ্যার মধ্যে জড়িয়ে আছি — যদি বলি তাই নিয়েই কাটবে, কাটাও, কেউ কোনো বাধা দেবে না। সংসারে কেউ তার থেকে উদ্ধার করতে পারবে না— কোনো উপদেশ কোনো উত্তেজনায় ফল হবে না । মানুষের কণ্ঠে নয়— এই স্তবমন্ত্রের বাণী বিশ্বের কণ্ঠে জেগে উঠুক। 8X \5
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২৪
অবয়ব