বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরো না, মৃত্যুকে গ্রাহ করে না ; বিপদের সামনে দাড়িয়ে সে বলে, “আমার পথ সামনে, আমি পিছু হটব না, আমার পরাজয় নেই– রুদ্র, তোমার প্রসন্নতা অন্তহীন ।” একবার ভেবে দেখে দেখি, এই মুহূর্তে যখন এখানে আমরা আনন্দোৎসব করছি তখন সমুদ্রের পারে মানুষের সঙ্গে মানুষের কী নিদারুণ যুদ্ধ চলেছে। সেখানে আজ এই প্রভাতের আলোক কী দেখছে— কী প্রলয়ের বিভীষিকা ! সেখানে এই বিভীষিকার উপরে দাড়িয়ে মানুষ তার মনুষ্যত্বকে প্রচার করছে—সেখানে ইতিহাসের ডাক এসেছে, সেই ডাক শুনে সবাই বেরিয়ে পড়েছে। কে ভুল করেছে, কে ভুল করে নি— এ যুদ্ধে কোন পক্ষ কী পরিমাণ দায়ী— সে কথা দূরের কথা। কিন্তু,ইতিহাসের ডাক পড়েছে— সে ডাক জার্মান শুনেছে,ইংরাজ শুনেছে, ফরাসি শুনেছে, বেলজিয়ান শুনেছে, অস্ট্রিয়ান শুনেছে, রাশিয়ান শুনেছে। ইতিহাসের ভিতর দিয়ে ইতিহাসের দেবতা তার পূজা গ্রহণ করবেন ; এ যুদ্ধের মধ্যে তার সেই উৎসব। কোনো জাতি তার জাতীয় স্বার্থকে পুঞ্জীভূত করে তার জাতীয়তাকে সংকীর্ণ করে তুলবে — তা হবে না, ইতিহাসবিধাতার এই আদেশ। মানুষ সেই জাতীয় স্বার্থদানবের পায়ে এতদিন ধরে নরবলির উদযোগ করেছে, আজ তাই সেই অপদেবতার মন্দির ভাঙবার হুকুম হয়েছে। ইতিহাসবিধাতা বলেছেন, ‘এ জাতীয় স্বার্থদানবের মন্দিরের প্রাচীর তোমাদের সবাইকে চূর্ণ করে ধুলোয় লুটিয়ে দিতে হবে, এ নরবলি আর চলবে না। যেমনি এই হুকুম পৌচেছে অমনি কামানের গোলা দুই পক্ষ থেকে সেই প্রাচীরের উপর এসে পড়েছে। বীরের দল ইতিহাসবিধাতার পূজায় তাদের রক্তপদ্মের অর্ঘ্য নিয়ে চলেছে। যারা আরামে 8 So