বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্তরতর শান্তি & না । কিন্তু, মানুষের কোলাহল আজ পর্যন্ত কি মানুষের সংগীতকে থামাতে পারল ? ঈশ্বর যে খনির ভিতর থেকে রত্বকে উদ্ধার করতে চান, তিনি যে বিরোধের এই কোলাহলের মধ্য থেকেই তার পূজাকে উদ্ধার করবেন– কারণ, এই কোলাহলের জীব মানুষ যখন শাস্তিকে পায় তখন সেই গভীরতম শাস্তির তুলনা কোথায় ? সে শাস্তি জনহীন সমুদ্রে নেই, মরুভূমির স্তব্ধতায় নেই, পর্বতের দুর্গম শিখরে নেই— আত্মার মধ্যে সেই গভীর শান্তি । চারি দিকের কোলাহল তাকে আক্রমণ করতে গিয়ে পরাস্ত হয়— কোলাহলের ভিতরে নিবিড়রূপে স্বরক্ষিত সেই শান্তি । হাট বসে গিয়েছে, বেচাকেনার রব উঠেছে— তারই মধ্যে প্রত্যেক মানুষ তার আপনার আত্মার ভিতরে একটি যোগাসনকে বহন করছে। হে যোগী, জাগো, তোমার যোগাসন প্রস্তুত, তোমার আসন তুমি গ্রহণ করে— এই কোলাহলে, ষড়রিপুর ক্ষোভ-বিক্ষোভ-বিরোধের মাঝখানে অক্ষত শান্তি— সেইখানে বোসো । সেখানে তোমার উৎসবপ্রদীপ জালো, কোনো অশান্ত বাতাস তাকে নেবাতে পারবে না। তুমি কোলাহল দেখে ভীত হোয়ে না— ফলের গর্ভে শস্ত যেমন তিক্ত আবরণের ভিতরে থেকে রক্ষা পায়, সেইরূপ কোলাহলের দ্বারাই বেষ্টিত হয়ে চিরকাল মানুষের শাস্তি রক্ষা পেয়ে এসেছে। মানুষ তার বৈষয়িকতার বুকের উপর তার ইষ্টদেবতাকে সর্বত্রই তো প্রতিষ্ঠিত করেছে। যেখানে তার আসক্তি জীবনের সব সূত্রগুলিকে জড়িয়ে রেখেছে, তারই মাঝখানে তার মন্দিরের চুড়া দেবলোকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমাদের চিত্ত আজ অমুকুল হয় নি— ক্ষতি নেই। যাক, যার মন যেখানে খুসি যাক— কোনো নিষেধ নেই। তবু এই অসীম 8:: ግ