অর্থাৎ তাহা কেবলমাত্র হাটের মেলা বাটের মেলা না হইলে, সেই মিলন নিজেকে কোনো না কোনো উৎসব-আকারে প্রকাশ করে। আমরা এই সংখ্যায় শাস্তিনিকেতনে অদ্য প্রবন্ধে বলিয়াছি, মিলন যেখানেই ঘটে, অর্থাৎ বহর ভিতরকার মূল ঐক্যটি যেখানেই ধর পড়ে, যাহারা বাহিরে পৃথক বলিয়া প্রতীয়মান তাহাদের অস্তরের নিত্য সম্বন্ধ যেখানেই উপলব্ধ হয়, সেখানেই স্থষ্টির অহেতুক অনির্বচনীয় লীলা প্রকাশ পায় । বহুর বিচিত্র ঐক্যসম্বন্ধই স্বষ্টি । মানুষ যেখানে বিচ্ছিন্ন সেখানে তাহার স্বজনকার্য দুর্বল। সভ্যতা শব্দের অর্থই এই, মানুষের মিলনজাত একটি বৃহৎ জগৎ ; এই জগতে ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট বিধিব্যবস্থা ধর্মকর্ম শিল্পসাহিত্য আমোদ-আহ্লাদ সমস্তই একটি বিরাট স্বষ্টি, এই স্বজনের মূলশক্তি মানুষের সত্য সম্বন্ধ। মানুষ যেখানে বিচ্ছিন্ন, যেখানে বিরুদ্ধ, সেখানে তাহার স্বজনকার্য নিস্তেজ । সেখানে সে কেবল কলেচালানো পুতুলের মতো চিরাভ্যাসের পুনরাবৃত্তি করিয়া চলে, আপন জ্ঞান প্রাণ প্রেমকে নব নব আকারে প্রকাশ করে না । মিলনের শক্তিই স্বজনের শক্তি ।
মানুষ যদি কেবলমাত্র মানুষের মধ্যেই জন্মগ্রহণ করিত তবে লোকালয়ই মানুষের একমাত্র মিলনের ক্ষেত্র হইত। কিন্তু মানুষের
জন্ম তো কেবল লোকালয়ে নহে, এই বিশাল বিশ্বে তাহার জন্ম । বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ডের সঙ্গে তাহার প্রাণের গভীর সম্বন্ধ আছে । তাহার
ইঞ্জিয়বোধের তারে তারে প্রতি মুহূর্তে বিশ্বের স্পন্ন নানা রূপে
রসে জাগিয়া উঠিতেছে।
বিশ্বপ্রকৃতির কাজ আমাদের প্রাণের মহলে আপনিই চলিতেছে,
oә е
পাতা:শারদোৎসব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
