পাতা:শিক্ষা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্রশাসনতন্ত্র

প্রেসিডেন্সি কলেজে ছাত্রদের সহিত কোনাে কোনাে য়ুরােপীয় অধ্যাপকের যে বিরােধ ঘটিয়াছে তাহা লইয়া কোনাে কথা বলিতে সংকোচ বােধ করি। তার একটা কারণ, ব্যাপারটা দেখিতেও ভালাে হয় নাই, শুনিতেও ভালাে নয়। আর-একটা কারণ, ইংরেজ ও ভারতবাসীর সম্পর্কটার মধ্যে যেখানে কিছু ব্যথা আছে সেখানে নাড়া দিতে ইচ্ছা করে না।

 কিন্তু কথাটাকে চাপা দিলে চলিবে না। চাপা থাকেও নাই, বাহির হইয়া পড়িয়াছে। মনে মনে বা কানে কানে বা মুখে মুখে সকলেই এর বিচার করিতেছে।

 বিকৃতি ভিতরে জমিতে থাকিলে একদিন সে আর আপনাকে ধরিয়া রাখিতে পারে না। লাল হইয়া শেষকালে ফাটিয়া পড়ে। তখনকার মতাে সেটা সুদৃশ্য নয়।

 বাহিরে ফুটিয়া পড়াটাকেই দোষ দেওয়া বিশ্ববিধানকে দোষ দেওয়া; এমনতরাে অপবাদে বিশ্ববিধাতা কান দেন না। ভিতরে ভিতরে জমিতে দেওয়া লইয়াই আমাদের নালিশ চলে।

 যাক, বাহির যখন হইয়াছেই তখন বিচার করিয়া কোনাে-একটা জায়গায় শাস্তি না দিলে নয়। এইটেই সংকটের সময়। জিনিসটা ভদ্র রকমের নহে, এটা ঠিক। ইহার আক্রোশটা প্রকাশ করিব কার উপরে? প্রায় দেখা যায় সহজে যার উপরে জোর খাটে শাসনের ধাক্কাটা তারই উপরে পড়ে। ঘরের গৃহিণী যেখানে বউকে মারিতে ভয় পায় সেখানে ঝিকে মারিয়া কর্তব্য পালন

 বিচারসভা বসিয়াছে। ইতিমধ্যেই ছাত্রদের সম্বন্ধে শাসন কড়া করিবার জন্য কোনাে মিশনারি কলেজের কর্তা কর্তৃপক্ষের নিকট আব্‌দার প্রকাশ করিয়াছেন। কথাটা শুনিতেও হঠাৎ সংগত বােধ হয়। কারণ, ছাত্রেরা