পাতা:শিক্ষা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাতীয় বিদ্যালয়
৮১

মধ্যে উপলব্ধি করে: সর্বং পরবশং দুঃখং সর্বমাত্মবশং সুখম্। তাহাদের অন্তরে যেন এই মহামন্ত্র সর্বদাই ধ্বনিত হইতে থাকে: ভূমৈব সুখম্‌, নাল্পে সুখমস্তি। যাহা ভূমা, যাহা মহান্‌, তাহাই সুখ; অল্পে সুখ নাই।

 ভারতবর্ষের প্রাচীন তপোবনে ব্রহ্মবিদ্যাপরায়ণ গুরু মুক্তিকাম ছাত্রগণকে যে মন্ত্রে আহ্বান করিয়াছিলেন সে মন্ত্র বহুদিন এ দেশে ধ্বনিত হয় নাই। আজ আমাদের বিদ্যালয় সেই গুরুর স্থানে দণ্ডায়মান হইয়া ব্রহ্মপুত্র এবং ভাগীরথীর তীরে তীরে এই বাণী প্রেরণ করিতেছেন: যথাপঃ প্রবতা যন্তি যথা মাসা অহর্জরম্ এবং মাং ব্রহ্মচারিণো ধাতরায়ন্তু সর্বতঃ স্বাহা। জলসকল যেমন নিম্নদেশে গমন করে, মাসসকল যেমন সংবৎসরের দিকে ধাবিত হয়, তেমনি সকল দিক হইতে ব্রহ্মচারীগণ আমার নিকটে আসুন―স্বাহা। সহ বীর্যং করবাবহৈ। আমরা উভয়ে মিলিত হইয়া যেন বীর্যপ্রকাশ করি। তেজস্বি নাবধীতমস্তু। তেজস্বীভাবে আমাদের অধ্যয়ন-অধ্যাপনা হউক। মা বিদ্বিষাবহৈ। আমরা পরস্পরের প্রতি যেন বিদ্বেষ না করি। ভদ্রন্নো অপি বাতয় মনঃ। হে দেব, আমাদের মনকে মঙ্গলের প্রতি সবেগে প্রেরণ করো।

 ভাদ্র ১৩১৩