পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

কামিনী রায়, মিসেস্ বি, এল, চৌধুরী, সরলা দেবী ইঁহাদের মত লোকও ভদ্র ঘরের যুবতীদের নৃত্যের সমর্থন করেন। ইহা লইয়া সাময়িক সংবাদ পত্রাদিতে বহু বাদ প্রতিবাদ হইয়া গিয়াছে, আমি তাহা পাঠ করিয়াছি, আর জ্বলিয়া পুড়িয়া মরিয়াছি।

 আমার আত্মচরিত লিখিতে যাইয়া এত কথা বলিবার প্রয়োজন এই যে, আমাদের মত পতিতা নারীর জীবন যে অসংযম ও অসাবধানতার ফল, তাহা সমাজের প্রায় সকল স্তরে প্রবেশ করিতেছে। যাঁহারা সমাজের মঙ্গল চিন্তা করেন, তাঁহাদের দৃষ্টি এইদিকে আকৃষ্ট হউক, ইহা আমার অভিপ্রায় ও নিবেদন। যে অপরিনামদর্শী যুবকের কুহকে পড়িয়া আজ আমি পতিতা— এই প্রকার রাণী চুনীর প্রেমিক ও এই সকল নাচগানের কর্ণধার রূপে আছেন, তাহা কি অভিভাবকগণ খবর রাখেন? নিজে মজিয়াছে বটে কিন্তু সমাজকে মজিতে দেখিলে দুঃখ হয়। আমাদের চুনীর বাবু-শিল্পটি......‘সম্মিলনীর’ একজন বিশেষ পৃষ্ঠপোষক। চুনীর নিকট এই সম্মিলনার দুই একটা অপবাদ শুনিয়াছি। সত্য মিথ্যা ঠিক না জানায় উল্লেখ করিলাম না।

 নব্য সাহিত্যের এই রিয়্যালিস্টিক আর্টের ফল আরও একদিকে দেখা দিল। পূর্ব্বে পতিতা নারী সৎকার্য্যে অর্থদান করিতে চাহিলে অনেকস্থলে তাহা গৃহীত হইত না। এমন কি মফঃস্বলের ভূমাধিকারী পতিতার নিকট হইতে ভূমির করও নাকি গ্রহণ করিতেন না। ক্রমশঃ এই ভাব দূর হইতে লাগিল। এ বিষয়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন অতি উদার হৃদয় ছিলেন। জন সাধারণের হিতকর কার্য্যে তিনি শুধু পতিতার দান গ্রহণ করিয়াই ক্ষান্ত ছিলেন না—