পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

এ বিষয়ে আমার ব্যাঙ্কের বাবুটীর নিকট প্রয়োজন মত উপদেশ লইয়াছি। একদিন আমি বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের নিকট বিনয়ের সহিত অনুরোধ করিয়া বলিলাম, “দেখুন, এ বেচারী এখন দুঃসময়ে পড়েছে— আপনি যদি পরিত্যাগ করেন, এর উপায় কি হবে? কিন্তু তিনি আমার কথা উপেক্ষা করিলেন। তখন আমি উত্তেজিত কণ্ঠে বলিলাম “মহাশয়, আমরা পতিতা নারী— আপনাদের ঘৃণিতা, আর আপনি সমাজের কর্ত্তা, আজ আমার কাছ থেকে আপনি তিরস্কার শুনে যেতে চান কি? ছিঃ, ছিঃ, আপনার লজ্জা হয় না? গুরুগিরি করতে গিয়ে সরল হৃদয় বিধবা শিষ্যানীর সতীত্ব নষ্ট করেছেন, দরিদ্রকে কলঙ্কে ডুবিয়েছেন। আপনি না স্মৃতি শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত, আপনি না অধ্যাপনা করে থাকেন? আপনার পাণ্ডিত্যে ধিক্— আপনার শাস্ত্র জ্ঞানে শত ধিক। আমরা মহাপাপী বারবণিতা, আমবা নরকে যাব, ইহা সত্য— আপনারা নরকে যাবেন না কেন জানেন?— আপনাদের জন্য এত বড় নরক কুণ্ড এখনও তৈরী হয়নি।” আমার কথা শুনিয়া বিদ্যাভূষণ মহাশয় চুপ করিয়া রহিলেন। আমি না থামিয়া,— তাঁর মুখের কাছে তর্জ্জনি হেলাইয়া ক্রুদ্ধস্বরে বলিলাম, “আপনি যেতে চান চলে যান। কিন্তু জানবেন আমি একে দিয়ে আদালতে নালিশ করে আপনার কাছ থেকে খোরপোয আদায় করে ছাড়ব। জানি, আপনি অস্বীকার করতে পারেন! কিন্তু আমরা এ বাড়ীর সকলে সাক্ষ্য দিব যে আপনি এর ঘরে আসতেন, এবং আপনার দ্বারা এর গর্ভসঞ্চার হয়েছে। আমরাতো কতই মিথ্যা বলি— যাতে একজন নির্দেষ নারীর উপকার