পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অগ্নি ক্রীড়া
১২১

সহকর্মী। অতিশয় সুখী হইলেন এবং আমাদিগকে বিবিধ প্রকারে সাহায্য করিলেন।

 এই অসহযোগ আন্দোলনের উত্তেজনা এত তীব্র ও পূবল হইয়া উঠিল যে, একসঙ্গে সকলে কাজ করিবার সময় মনে থাকিতনা যে, আমরা অস্পৃশ্য ঘৃণিত বেশ্যা— আর ইঁহারা সম্মানিত ভদ্র গৃহস্থ যুবক। সেই কর্ম্মী যুবকেরাও ভুলিয়া যাইত যে তাহারা বারবনিতার সহিত চলাফেরা করিতেছে। যে সকল পবিত্র-চরিত্র ব্যক্তি কখনও বেশ্যালয়ে আসেন নাই বা আসিবার কল্পনাও করেন নাই, তাঁহাদের সঙ্গে আমরা এই অসহযোগ আন্দোলনের নেশায় মাতিয়া এক ঘোটব গাড়ীতে বেড়াইয়াছি, হাস্য পরিহাসের সহিত তাঁহাদের সঙ্গে কথাও বলিয়াছি। সকলে আমাদের স্বার্থত্যাগের প্রশংসা করিতেন— গর্ব্বের আনন্দে আমাদের বুক ফুলিয়া উঠিত।

 একদিন কর্ম্মশেষে গৃহে ফিরিবার পূর্ব্বে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের নিকট বিদায় লইবার সময় তাঁহাকে প্রণাম করিলাম। তিনি স্নেহভরে আমাদের আশীর্ব্বাদ করিলেন। একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি সেইস্থানে বসিয়াছিলেন। আর কেহ ছিলেন না। আমরা যে বারবনিতার দল, তাহা তিনি বুঝিলেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনকে তিনি প্রশ্ন করিলেন “শেষ কালে এরাও এসে কাজে নেমেছে— এটা কি ভাল হচ্ছে মি: দাশ?” চিত্তরঞ্জন শ্লেষের সহিত উত্তর করিলেন “আপনারা হ’লেন রুচিবাগীশের দল। আমার সঙ্গে আপনাদের মিলবে না। সঞ্জীবনী-সম্পাদক কেষ্ট মিত্তিরের কাছে যান। তিনি আপনাদের মনের মত লোক। কেশব সেনের সঙ্কীর্ণতা থেকে মুক্ত হ’য়ে উদার মত অবলম্বন করবার জন্য সাধারণ-ব্রাহ্ম-