পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

সমাজের সৃষ্ট হ’ল; কিন্তু শেষে উহারই মধ্যেও ক্ষুদ্রতা দেখা দিল। কূপের মত এতটুকু হলে হবে না— সমুদ্রের মত প্রশস্ত বিশাল হ’য়ে সকলকে গ্রহণ করা চাই। পাশ্চাত্য দেশে কি দেখছেন? আমাদেরও তাই করতে হবে। যাদের ঘৃণায় দূরে ঠেলে রেখেছি, তারাই আজ এগিয়ে আসছে। এ শুভলক্ষণ, আমি আস্তকুঁড়ের আবর্জনায় এক অপূর্ব্ব শক্তির সন্ধান পেয়েছি।”

 আমরা চলিয়া আসিলাম। তাঁহার ঊর্ক বিতর্ক কতদূর চলিয়াছিল জানি না। কিন্তু আজ দেখিতেছি, আমরা দেশবন্ধুর আশা পূর্ণ করিতে পারি নাই। আমরা সেই মহাপুরুষের সুখের স্বপ্ন ভাঙ্গিয়া দিয়াছি। তিনি মনে করিয়াছিলেন, দেশ সেবার অনলে আমাদের সকল পাপ দগ্ধ হইয়া যাইবে। তাহা হইল না। দেশকর্ম্মীদের সহিত বারবনিতাদের এই প্রকার অবাধ মেলা-মেশার ফল ভাল হইল না।

 আগুন লইয়া খেলা বড় বিপজ্জনক। সকলে তাহা পারে না। আমাদিগকে কর্ম্মক্ষেত্রে আনিয়া দেশ-নায়ক গণ ভুল করিয়াছিলেন। সৎকার্য্যের অনুষ্ঠানে একটা পতিব্রতার ভিত্তির প্রয়োজন। আমাদের তাহা ছিল না। আমরা শুদ্ধচিত্ত ও সংযত না হইয়াই একটী গুরুতর কার্য্যে নিযুক্ত হইয়াছিলাম। মিথ্যাচার, প্রতারণা, ছলনা, ইন্দ্রিয়পরতা এই সব হইল বারবনিতাদের চরিত্রের প্রধান লক্ষণ। দেশের কার্য্যে ব্রতী হইলেও আমাদের এই সকল দুষ্প্রবৃত্তিই আমাদিগকে পরিচালিত করিল। সুতরাং কথায় যে বলে “শিকগড়িতে বানর”—আমাদেরও হইল তাহাই।

 যে সকল কর্ম্মী যুবকের চরিত্র-বল এমন ছিল যে একটা সিগারেট পর্য্যন্ত কখনও খায় নাই, তাহারা কেহ কেহ এই অসহযোগ