পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

কলিকাতায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। যুবকটী কোন ধনী ব্যবসায়ীর পুত্র। বাপের লোহার সিন্দুক ভাঙ্গিয়া আটশত কাটা লইয়া পতিতা-প্রণয়িণীকে কলিকাতায় আনিলেন। বসন্তকুমারীর মুখে শুনিলাম, বরিশালের এক বিখ্যাত দেশকর্ম্মী দার্শনিক ব্যক্তি তরুণ যুবকদের দ্বারা পতিতালয়ে অসহযোগ মন্ত্র প্রচার করিতেছেন। তথাকার বারবণিতাগণ চরকায় সূতা কাটিতেছে ও খদ্দর পরিধান আরম্ভ করিয়াছে। আমি এত উৎসাহিত হইলাম যে আমিও একটা চরকা কিনিয়া ফেলিলাম— খদ্দরের শাড়ী ব্লাউজ পড়িতে লাগিলাম।

 আমার চেষ্টায় রামবাগানে দশ বার জন পতিতা নারী চরকায় সূতা কাটিতে লাগিল। কেহ কেহ খদ্দর পড়িতে আরম্ভ করিল। কিন্তু দুই মাসের মধ্যে সব শেষ। চরকা খদ্দর বন্ধ হইয়া গেল। তা’ হইবার কথা— কারণ সংযম ও পবিত্রতার ভিত্তি ব্যতীত উহা দাঁড়াইতে পারে না।

 একদিন দেখিলাম কোন খবরের কাগজে লেখা হইয়াছে— “কি দুঃখের বিষয়— অশ্বিনীকুমারের বরিশালে আজ যুবকেরা পতিতার সংষ্পর্শে যাইতে কিছুমাত্র লজ্জিত হয় না।” আমি বসন্তকুমারীকে জিজ্ঞাসা করিলাম “ভাই, তোমাদের করিশালে অশ্বিনীকুমার কে? বসন্ত বলিল “আমি তিন মাস পূর্ব্বে ত্রিপুরা জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া হইতে বরিশালে আসি। অশ্বিনীকুমারের পরিচয় আমি জানিনা— উনি বোধ হয় জানিতে পারেন।” বসন্ত তাহার বাবুকে লক্ষ্য করিয়া বলিল। যুবকটী পার্শ্ববর্ত্তী পালঙ্কের উপর শুইয়া পান চিবাইতে চিবাইতে বিকৃতস্বরে গাহিতেছিলেন—