পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৪
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

ইহার বিরুদ্ধে ছিলেন। ঐ সংবাদ পত্রে তিনি চিরদিন এই সম্পর্কে কঠোর মন্তব্য প্রকাশ করিয়া থাকেন। হিমাচলের মত দৃঢ় চিত্ত এই মহাপুরুষকে আমি জীবনে কয়েকবার মাত্র দেখিয়াছি; তাহাতে তাঁহাকে দেবতা সদৃশ বলিয়া আমার মনে হইয়াছে— তাঁহার কথা আমি আর ও দুইটী পতিতা নারীর মুখে শুনিয়াছি— তাহাদের নাম সুরুচি ও ঊষাবালা। যথাস্থানে ইহাদের কথা বলা হইবে।

 শ্রীযুক্ত কৃষ্ণকুমার মিত্র মহাশয়ের সম্বন্ধে এখানে আরও দুই একটা কথা না বলিয়া পারিলাম না। তাঁহার সুনীতি ও পবিত্রতার আদর্শের তুলনায় আমরা অতি হীন— নরকের কীটানুকীট। তথাপি তাঁহার কথা এই জন্য বলিতেছি, তাহাতে আমার চরিত্র আরও পরিস্ফুট হইবে। কৃষ্ণবাবু দুর্নীতিকে কখনও কোন মিথ্যা অজুহাতে ক্ষমা করেন নাই— কাহাকেও ছাড়িয়া কথা কহেন নাই। রবীন্দ্রনাথ থিয়েটারের অভিনেত্রীদের গান শিখাইতে যান বলিয়া তাঁহাকে তিরস্কার করিয়াছে— আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র পতিতার দান গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া তাঁহার উপরও দোষারোপ করিয়াছেন— ডাক্তার বিমল চন্দ্র ঘোষ ‘সরষূ সদনের’ সাহায্যার্থ বেশ্যার দ্বারা নাট্যাভিনয় করিয়াছেন বলিয়া তাঁহার অজস্র নিন্দাবাদ করিয়াছেন— শ্রীযুক্তা জ্যোতিশ্বরী গাঙ্গুলী মিনার্ভা থিয়েটারে বেশ্যাদের সভায় মহিলা ভলাণ্টিয়ারদের নেত্রী হইয়াছিলেন বলিয়া তৎসম্বন্ধে তীব্র মন্তব্য করিয়াছেন। ইঁহারা সকলেই ব্রাহ্ম সমাজের এক এক জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। আমার সকল প্রণয়ীই ইঁহাকে ভয় করিত। মহাত্মা গান্ধী যখন বঙ্গদেশ পরিভ্রমণ করেন, তখন তিনি বরিশালে গমন করিলে সেখানকার পতিতা-নারী-সমিতি তাঁহাকে