পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঙ্কিল আবর্ত্তে
১৩৯

য়াছিলাম, তাহারই ঘরে তিনি যাতায়াত করিতে আরম্ভ করিলেন। এখন ব্যাঙ্কের টাকায়ই নটীর পূজা আরম্ভ হইল। অপব্যয়ের ফলে কয়েক বৎসরের মধ্যেই ব্যাঙ্ক ফেল্ হইল। তিনি নিজেও গেলেন, দেশের লোকেরও সর্ব্বনাশ। অনেক ব্যবসা, শিল্প প্রতিষ্ঠান এইভাবে নষ্ট হইয়া গিয়াছে। অনেকের আজীবন সঞ্চিত ধন, ব্যাঙ্ক ফেল হওয়ায়, তাঁহারা ভিখারী সাজিয়াছেন। আপনারা মূল কারণ অনুসন্ধান করিলে তাহা জানিতে পারিবেন। কোনও পুরাতন বিখ্যাত মাসিক পত্রিকাও তাহার ম্যানেজারের বেশ্যাশক্তির ফলে বিলুপ্ত হইয়াছে।

 আমি মনে করিলাম আর কাহারও নিকট বাঁধা থাকিবনা। ভাল গায়িকা বলিয়া আমার সুনাম ছিল—আমি সোনাগাছিতে উঠিয়া গেলাম। এইখানে রাজশাহী জেলার কোন জমিদার যুবক আমার গৃহে আসিতেন। তিনি অতিশয় মদ্যপায়ী ছিলেন। তাঁহার সঙ্গে প্রায়ই থিয়েটারে যাইতাম। একদিন বক্সে বসিয়া আছি—জমিদার বাবুটি অতিরিক্ত মদ্যপানে একটু মাতলামি আরম্ভ করিয়াছেন। আমরা জানিতাম না—বাবুর শাশুড়ীটি নিকটবর্ত্তী আর এক বক্সে বসিয়াছিলেন। তিনি নাকি পূর্ব্ববঙ্গের কোন বিশিষ্ট জমিদার গৃহিণী। জামাতার এইরূপ লজ্জাজনক আচরণ দেখিয়া তিনি আমাদের নিকট হইতে জামাতাকে তখনি নিজগৃহে লইয়া গেলেন। এখন সেই জমিদার বাবুটী সত্যবালা নাম্নী আমার পরিচিতা এক পতিতার ঘরে যান। সমাজে তাঁর মান মর্য্যাদা যথেষ্ট।

 আমি মাঝে মাঝে বড়লোকের বাগান অথবা মজলিসে গানের মুজ্‌রায় যাইতাম। ইহাতে অর্থোপার্জ্জন হইত বটে, কিন্তু বিপদও ছিল। বড়লোকের খেয়াল মাফিক চলা যে কি বিরক্তিজনক, তাহা