পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঙ্কিল আবর্তে
১৪১

 মোহান্তের প্রাসাদের সম্মুখে সত্যাগ্রহ করিতে কংগ্রেসীদল আমাদিগকে দিলনা। মন্দির রক্ষা করাই আমাদের প্রধান কার্য্য হইল। স্বামী সচ্চিদানন্দকে পুলিশ গ্রেপ্তার করিতে আসিলে আমরা তাঁহার চারিদিকে ঘেরিয়া বসিলাম। পুলিশ বিফল মনোরথ হইয়া চলিয়া গেল। আমরা পালা করিয়া মন্দিরের দ্বারে প্রহরীর কার্য্য করিতে লাগিলাম।

 ডাক্তার প্রতাপ চন্দ্র গুহরায় ও শ্রীযুক্তা সন্তোষ কুমারী গুপ্তা ইঁহারাই তারকেশ্বরে সত্যাগ্রহের প্রধান পরিচালক ছিলেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন একদিন যাইয়া আমাদের সকলকে উৎসাহিত করিয়া আসেন। আমাদের সুখ ও স্বচ্ছন্দতার জন্য প্রচুর অর্থব্যয় হইয়াছে। সত্যাগ্রহ তহবিলে বহু সহস্র টাকা চাঁদা উঠিয়াছিল। যথাসময়ে তারকেশ্বর সমস্যার এক প্রকার মীমাংসা হয়। কিন্তু সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সময় সেখানে যে বীভৎস ব্যাপার প্রত্যক্ষ করিয়াছি, তাহা আজও ভুলিতে পারি নাই। মহিলা ভলাণ্টিয়ার নামধারী বেশ্যাদের সহিত বিভিন্ন দলের ভলাণ্টিয়ার নামধারী অনেক ভণ্ড লম্পটের অবাধ কলুষিত সংযোগ— যাঁহারা দেশকর্ম্মী বলিয়া পরিচিত তাঁহাদের কাহারও রাত্রিযাপন সমস্যা— আমার নিকট কোন সত্যাগ্রহী ব্যক্তির প্রস্তাব— এই সব দেখিয়া মনে হইয়াছে, তারকেশ্বরে ধর্ম্ম প্রতিষ্ঠিত হয় নাই— তথায় পুণ্যের আলোক নিভিয়া গিয়াছে।

 সেখানে দেব-দর্শনার্থী সুকৃতি নাম্নী এক যুবতীর সহিত আমার পরিচয় হয়। সাবিত্রী নামে সুকৃতির এক ভগ্নী ছিল। ইহারা কলিকাতা জোড়াসাঁকো পল্লীর বিখ্যাত উচ্চ বংশের কন্যা। লোকে বলে এই বংশে লক্ষ্মী সরস্বতীর বিবাদ নাই। সুকৃতি ও সাবিত্রী