পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫২
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

স্থান হয় নাই। সে কাশীতে পিতার নিকট থাকিত। বাল্যকাল হইতে উপন্যাস নাটক নভেল পড়ায় তাহার খুব ঝোঁক ছিল। ক্রমশঃ সে উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির হইয়া উঠে। পিতামাতার শাসন সে মানিত না, কাশীতে দুষ্ট লোক অনেক আছে, সুরুচি কোন দুর্বৃত্তের সহিত পলায়ন করিয়া কলিকাতায় আসে! এখানে অনেকের হাতে পড়িয়া সে কলুষিত হয়। পুলিশ তাহাকে আপত্তিজনক অবস্থায় পাইয়া গ্রেপ্তার করে, পুলিশ আদালতে তাহাকে নেওয়া হইলে বিচারক বিষম সঙ্কটে পড়িলেন, নারীরক্ষাসমিতির অক্লান্ত কর্ম্মী ও সম্পাদক শ্রীযুক্ত মহেশচন্দ্র আতর্থী মহাশয় সেদিন অন্য কোন কার্য্য উপলক্ষ্যে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁহাকে বিচারক চিনিতেন। তিনি মহেশবাবুকে বলিলেন “আপনি এই মেয়েটিকে নিয়ে যান, নারীরক্ষা সমিতি হইতে ইহার যথোচিত ব্যবস্থা করুন।”

 সুরুচি কৃষ্ণকুমার মিত্র মহাশয়ের ঘরে আশ্রয় পাইল, তিনি পিতৃস্নেহে ইহাকে সৎপথে আনিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন, কিন্তু সুরুচি এই সরল-প্রাণ, উদার হৃদয়, মহানুভব ব্যক্তিকে প্রতারণা করিয়া চলিয়া আসিল, দুষ্ট লোকের প্রলোভনে পড়িয়া সে পাশের পথই বাছিয়া লইল। এক্ষণে এক ধনী পার্শী যুবক তাহাকে বাঁধা রাখিয়াছে, মেম-সাহেবদের ষ্টাইলে সে থাকে— ঘাড়ের উপর পর্য্যন্ত ছোট করিয়া চুল ছাঁটা— হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট, খোলা হাতের রংএর সহিত মানন-সই সিল্কের মোজা,— পরিষ্কার হিন্দী বলে; ইংরাজীও কিছু শিখেছে।”

 তাঁরকবাবু সমস্ত মনোযোগের সহিত শুনিয়া বলিলেন, “সে কৃষ্ণবাবুর বাড়ী হইতে পলাইল কেন, তাহা বুঝি জান না। আমি