পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঙ্কিল আবর্ত্তে
১৫৩

বলিলাম—না—সে কথাত সুরুচি কিছু বলে নাই। তারকাবু বলিলেন,”সে কৃষ্ণবাবুর জামাতা শচীনবাবুর একটী সোনার ঘড়ী সরাইয়াছিল, এজন্য মহেশবাবু তাহাকে পুনরায় আদালতে দিয়া আসেন। তথায় সে বেশ্যাবৃত্ত করিবার অনুমতি চায়, বিচারক অগত্যা তাহাকে তথাস্তু বলিয়া ছাড়িয়া দেন।”

 আমাদের এ রূপ কথাবার্ত্তা হইতেছিল এমন সময় সুরুচি হাসিতে হাসিতে আমার ঘরে আসিয়া প্রবেশ করিল, তাহার হাতে নানাবিধ ফুল, ফল, কেক্, বিস্কুট, প্রভৃতি রহিয়াছে। আমি তাহাকে বসিতে বলিলাম, সে দাঁড়াইয়াই বলিতে লাগিল “মানদি, আজ মোটরে চড়ে হগ্‌সাহেবের বাজারে গিয়েছিলুম, এই সব কিনে এনেছি, কাল সকালে আমাদের বাড়ীতে তোমার চাঁ-এর নিয়ন্ত্রণ, যেও। ভাল কথা, আজ সেই বুড়ো মহেশ আতর্থীর সঙ্গে দেখ হ’ল, আমি বল্লুম, কি বুড়ো কেমন আছ?

 তারকবাবু হুরুচির সম্বন্ধে কি করিয়াছিলেন জানি না, আমি সুরুচি ঊষার কথা ভাবিয়া দেখিলাম ইহারা আমারই মত হতভাগিনী। যৌবনের প্রারম্ভে প্রলোভনের বশীভূত হইয়া সংযমের বাঁধ একবার ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, আর ত অকুল সমুদ্রে ফুল পাইতেছে না। ইহারাও আমার মত সৎপথে আসিবার সুযোগ পাইয়াছিল; কিন্তু আমারই মত ইহাদের অদৃষ্টেও বোধ হয় আরও দুঃখ ভোগ আছে তাই অনিবার্য্য কর্ম্মফল কেহ খণ্ডাইতে পারিল না।