পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

লেও তাহা গ্রাহ্য হইল না। আমি একদিন তাঁহাকে বলিলাম―আমিই চিরকুমারী থাকিয়া ব্রত উদ্যাপন করিব, তিনি অনায়াসে সংসার আশ্রমে প্রবেশ করিতে পারেন। তিনি বলিলেন, আশ্রমের সেরূপ ওলট পালট করিতে আমাকে নাকি তাঁহার সঙ্গে যোগ দিতে হইবে। আমি তৎক্ষণাৎ দুই কর্ণে দুই হস্তের দু’টি অঙ্গুলি প্রদান করিতেই, অসাবধানতা বশতঃ তাঁহার সম্মুখে বে-আব্রু হইয়া পড়িলাম, তিনি উন্মত্তের মত আসিয়া আমাকে গভীর আলিঙ্গনে নিষ্পীড়িত করিয়া গণ্ডদেশে এক-নিশ্বাসব্যাপী চুম্বন মুদ্রিত করিয়া দিলেন।

 তারপরই একদিন সরাসরি বিবাহের প্রস্তাব। আমি বলিলাম এর কর্ত্তা আমি নই, দাদা-বাবু। দাদা-বাবু আসামীর সঙ্গে বাঙ্গালী শিক্ষিতা যুবতীর এরূপ মিলন অসম্ভব বলায়, আমার গবচন্দ্র প্রণয়ীটি কিল খাইয়া কিল চুরি করিয়া অদৃশ্য হইলেন।

 কুমার গোপিকারমণ রায় উল্লিখিত জমিদার যুবকের নাকি বিশেষ বন্ধু, কুমার বাহাদুরের আলয়ে আমার হতাশ প্রণয়ী নিমন্ত্রিত হইতেন, শুনিয়াছি। কতদিন ইনি কুমার বাহাদুরের গৃহে আমাকেও লইয়া যাইতে চাহিয়াছিলেন কিন্তু আমি সে অনুরোধ রক্ষা করিতে পারি নাই। তবে কুমার বাহাদুরকে একদিনের জন্য আমার প্রণয়ীর মারফত, আমার কুটীরে পদধূলি প্রদানের জন্য অনুরোধ করিয়াছিলাম, কিন্তু জানিনা কি অপরাধে তিনি আমাকে কৃতার্থ করেন নাই। ঐ সময় আমি বেশ্যা বলিয়া পরিচিতা ছিলাম না। আমার এই বিচিত্র জীবনের আখ্যায়িকার কত কথাই লিখিলাম। মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় কত ঘৃণিত কার্য্য করিতে পারে তাহাও দেখাইলাম। যাহা পবিত্র, মানুষ তাহাকে কলুষিত করিতে