পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত
২৭

দিলেন। আমি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়িতে লাগিলাম। আমি স্কুলের গাড়ীতেই যাতায়াত করিতাম। কারণ―বাবা বলিলেন, তাঁহাকে এখন প্রায়ই মোটরে বাহিরে যাইতে হয়, সুতরাং আমাকে ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছাইতে ও স্কুল হইতে লইয়া আসিতে নিজেদের মোটর সকল সময় পাওয়া যাইবে না। গৃহ শিক্ষক মহাশয় সকালে ও সন্ধ্যায় দুবেলা আমাকে পড়াইতেন।

 যতদিম মা বাঁচিয়া ছিলেন, আমি মায়ের সঙ্গে এক বিছানায় ঘুমাইয়াছি। মায়ের মৃত্যুর পর আমি বাবার ঘরে পৃথক বিছানায় শুইতাম। একদিন বাবা আমাকে বলিলেন, “খুকু―তুমি তোমার পিসিমার কাছে ঘুমিও”। আমি কখনও পিতার অবাধ্য হই নাই। আর একদিন বাবা চাকরকে ডাকিয়া দেওয়ালে মায়ের ছবিখানা দেখাইয়া বলিলেন, “এই বড় ছবিখানা খুকুর পড়বার ঘরে টানিয়ে দিস্‌ ত।” আমার জন্য দুইটি নূতন বড় বুক্‌কেস্, একখানা বড় মেহগিনি কাঠের সুন্দর টেবিল ক্রয় করা হইয়াছিল। তাহা আমার পড়িবার ঘরে সাজান হইল। মেজেতে পাতিবার জন্য সুন্দর কার্পেট আসিল। একটা কাট্‌গ্লাসের খুব দামী দোয়াতদানী ও একটী ওয়াটারম্যানের ফাউণ্টেন পেন বাবা আমাকে দিলেন। গ্রীষ্মকাল পড়িয়াছিল; আমার পড়িবার ঘরের বিজলী পাখায় নূতন রং করা হইল। আরও চারিখানা সুন্দর বিলাতী ল্যাণ্ডস্কেপ ছবির সঙ্গে মায়ের ছবিখানাও সেই ঘরে শোভা পাইল। মাষ্টার মহাশয় আমার পড়িবার ঘরের সাজসজ্জা দেখিয়া অতিশয় প্রীত হইলেন। আমি স্কুলের পড়ায়, নভেলে, থিয়েটার ও সিনেমার আমোদে নিমগ্ন।

 এমন সময় এক বসন্ত প্রভাতে আমাদের গৃহদ্বারে নহবতে