পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৈশোরে
৩১

দুইবেলাই তিনি আসিতেন। আমি চতুর্থ শ্রেণী হইতে প্রমোশন পাইয়া তৃতীয় শ্রেণীতে উঠিলাম।

 নন্দদাদা আমার দুই ক্লাশ উপরে পড়িত। এবার তার এণ্ট্রান্স্‌ ক্লাসে উঠিবার কথা। কিন্তু লেখাপড়ায় বিশেষ মনোযোগ না থাকায় সে বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হইল। সুতরাং দ্বিতীয় শ্রেণীতেই রহিয়া গেল। নন্দ দাদা ও আমি একই মাষ্টার মহাশয়ের নিকট পড়িতাম।

 দুই চারি দিনের পরিচয়ের পর একদিন মাষ্টার মহাশয় আমাকে বলিলেন “মানু, তুমি আমাকে ‘মাষ্টার মশাই’ বলোনা― এ ডাকটা আমি ভারী অপছন্দ করি। আমাকে আমার নাম ধরে, ডাক্‌তে পার।” আমি কিছুমাত্র অপ্রতিভ না হইয়া বলিলাম―আপনি যেমন ‘মশাই' কথাটা পছন্দ করেন না―আমিও তেমনি নামের শেষে ‘বাবু’ যোগ করা ভালবাসিনা। দেখেন নি―আজকাল ‘বাবু’ উঠে গিয়ে ‘শ্রীযুতের, প্রচলন হয়েছে?”

 মাষ্টার মহাশয় হাসিয়া বলিলেন, “তা বেশ, তুমি আমাকে ‘মুকুল দাদা’ বলে ডাক্‌তে পার। তুমি ত জান আমার নাম মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়।” এইরূপে মাষ্টার মহাশয়ের সহিত আমার ঘনিষ্ঠতা জন্মিতে লাগিল। আমি সেইদিন হইতে তাঁহাকে দাদা বলিয়া সম্বোধন করি।

 একদিন বাবা আমাকে ডাকিয়া বলিলেন, “খুকু, তোমার মাষ্টার মহাশয়ের সকালে বিকালে চা খাওয়ার অভ্যাস আছে। ওঁর চায়ের ব্যবস্থাটা এখানেই করে’ দিও। তাহ’লে তিনি আরও একটু আগে আসতে পারেন।”