পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৈশোরে
৩৩

আমি তখন লক্ষ্য করি নাই, আমার ঐ সোনার চুড়ী-পরা হাতখানির ছায়া পেয়ালার মধ্যস্থিত তপ্ত তরল পদার্থে পড়িবার পূর্ব্বে মাষ্টার মহাশয়ের হৃদয়ে অঙ্কিত হইয়াছিল।

 পূজার সময় হাইকোর্টের দীর্ঘ অবকাশ। বাবা বিমাতাকে লইয়া পশ্চিমে বেড়াইতে গেলেন। তাঁহাদের সঙ্গে দুইজন ভৃত্য ব্যতীত আর কেহ ছিলনা। আমার যাইবার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু মুখ ফুটিয়া বাবাকে কিছু বলিতে পারি নাই। কারণ, আমাকে সঙ্গে নেওয়া যে তাঁহার অভিপ্রায় নয়, তাহা আমি পূর্ব্বেই বুঝিয়াছিলাম। আমার হৃদয়ে দারুণ আঘাত পাইলাম। বিদেশে যাইয়া পিতা অথবা বিমাতা কেহই আমার নিকট চিঠিপত্র লেখেন নাই। পিসিমা আসিয়া বাড়ীতে ছিলেন। তিনি মধ্যে মধ্যে দুই একখানি চিঠি পাইতেন―আর টাকা পাঠাইবার জন্য সরকার মহাশয়ের নিকট চিঠি আসিত।

 একদিন নন্দ দাদা আমাকে বলিল “মানী, আজ মিনার্ভা থিয়েটারে যাবে?―চল―শিরীফরহাদ্ প্লে―খুব সুন্দর অপেরা। একেবারে অফুরন্ত নাচগান। সে একখানি বিজ্ঞাপন দেখাইল। পিসিমার কাছে অনুমতি চাহিলে তিনি বলিলেন “তোরা দু’জনই ছেলে মানুষ, মাষ্টার মশাইকে সঙ্গে নিয়ে গেলে ভাল হয়।” বলা বাহুল্য, মাষ্টার মহাশয় আপত্তি করিলেন না।

 আমরা তিনজনে একটা বক্স্‌ রিজার্ভ করিয়া বসিয়াছিলাম। অভিনয় দেখিয়া আমি মুগ্ধ হইলাম। বিশেষতঃ নৃত্যগীত আমাকে অতিশয় প্রীত করিয়াছিল। মাষ্টার মহাশয় প্রতিদৃশ্যের ঘটনাবলী ও চরিত্র সমূহ বিশ্লেষণ করিয়া আমাকে বুঝাইয়া দিলেন। ফর্‌হাদের