পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

ছিলনা। এখন তিনি নিজের বিষয়―কর্ম্ম দেখিতে অধিক মন দিলেন।

 আমার এক দূর সম্পর্কীয় জ্ঞাতি ভ্রাতা চাকুরীর চেষ্টায় এক দিন আমাদের বাড়ীতে পিতার নিকট আসেন। তাঁহাকে আমি পূর্ব্বে কখনও দেখিয়াছি বলিয়া মনে হয় না। তিনি কিন্তু আমার সঙ্গে নিতান্ত পরিচিতের মত জিজ্ঞাসা করিলেন “কিরে মানু কেমন আছিস্‌―কোন্ ক্লাসে পড়িস্? কে তোকে বাড়ীতে পড়াচ্ছে,” আমি বলিলাম―“এখন বেথুনে সেকেণ্ড ক্লাসে পড়্‌ছি। মুকুল বাবু আমার প্রাইভেট টিউটার।”

 তিনি আশ্চর্য্য হইয়া বলিলেন “ও―আমাদের ‘ঝরণার’ কবি মুকুল বাড়ুয্যে?―সে যে আমার ক্লাসফ্রেণ্ড্‌, একসঙ্গে স্কটীস্‌চার্চ্চ কলেজে পড়েছি।” সন্ধ্যা বেলায় মাষ্টার মহাশয় আসিলেন, তাঁহাকে দেখিয়া তিনি বলিলেন “কি ভাই মুকুল, শুন্‌লুম তুমি মানুকে পড়াচ্ছ―বেশ। তারপর―কাব্য চর্চ্চা ছাড়া আর কি কাজ কর্ম্ম হচ্ছে?”

 মাষ্টার মহাশয় তাঁহার সঙ্গে অনেকক্ষণ নানা কথা বার্ত্তা কহিলেন। আমাকে বলিলেন “রমেশ বাবু যে তোমাদের আত্মীয় এ-কথাত মানু তুমি কখনও আমায় বলনি।” আমি বলিলাম, “আমিত জানিতাম না। বাবা সেদিন এঁর পরিচয় দিলেন।” রমেশ দাদা বলিলেন “আমি প্রায় দশবৎসর পূর্ব্বে একবার এ-বাড়ীতে এসেছিলাম। তখন মানদার বয়স ৩।৪ বৎসর হবে। তখন আমি সবে মাত্র এণ্ট্রান্স দিয়েছি; স্বদেশী আন্দোলন আরম্ভ হ’ল, পড়াশুনা ছেড়ে কয়েক বৎসর খুব হৈ চৈ করা গেল। তারপর