পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভুল ভাঙ্গিল
৬৫

 আমরা এলাহাবাদ ও আগরা হইয়া মথুরায় গেলাম। প্রয়াগে গঙ্গাযমুনা সঙ্গমে স্নান করিলাম। তাজমহল, আগরাফোর্ট ও সেকেন্দ্রায় আকবরের সমাধি প্রভৃতি দেখিবার জন্য পাঁচদিন আগরায় বিলম্ব হইল। প্রায় পাঁচ মাস ঘুরিয়া আষাঢ় মাসের প্রথম ভাগে আমরা মথুরায় পৌঁছিলাম। এখানে কিছু বেশীদিন থাকিবার ইচ্ছা। এত সহর থাকিতে মথুরার উপর রমেশদার এত মন পড়িল কেন, তাহা তখন বুঝিতে পারি নাই।

 স্বামীঘাটের নিকটে একেবারে যমুনার ধারে অল্প ভাড়ায় একটী ভাল বাড়ী পাওয়া গেল।

 ক্যাণ্টনমেণ্টের দিকে ইউরোপীয় ধরণের হোটেল একটী আছে বটে, কিন্তু সেখানে থাকা রমেশদার মত হইল না। টাকা ফুরাইয়া আসিয়াছিল, সাহেবী ষ্টাইল আর ত চলেনা। রমেশদ। বলিলেন “মথুরায় দেশীয় ভাবে থাকাই সুবিধাজনক।” তিনি কোট প্যাণ্টুলন, টাই টুপি ছাড়িলেন। আমার পোষাকে বিদেশীয় ভাব তেমন কিছুই ছিল না। গোড়ালী উঁচু জুতার বদলে আমি নাগরাই জুতা পরিলাম। রান্না করিবার জন্য বামুন ঠাকুর রাখা হইল। একটী চাকরও পাওয়া গেল—সে বাজার করিত, জল তুলিত, থালা বাসন মাজিত।

 একদিন দেখিলাম রমেশদা গোঁফ কামাইয়া ফেলিয়াছেন। আমি বলিলাম “ওকি রমেশদা, তোমায় ভাল দেখাচ্ছে না।” রমেশদা বলিলেন “ভাবনা কি—আবার গজাবে।”

 কথাটা পরিহাসের বাতাসে উড়িয়া গেল। কিন্তু ব্যাপার এইখানে শেষ হইল না— আর একদিন দেখিলাম, রমেশদা