পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

এক নাপিত ডাকাইয়া মস্তক মুণ্ডিত করিলেন, মধ্যস্থলে এক গোছা চুল শিখার মত রাখিলেন। আমার সন্দেহ হইল— ইহার মধ্যে কোন মতলব আছে। তার পর যখন ললাটে, নাসিকায় চন্দনের তিলক ছাপ দিয়া, কাছা শূন্য কাপড় ও মাদ্রাজী জুতা পড়িয়া রমেশদা একেবারে দ্রাবিড়ী পণ্ডিত সাজিলেন, তখন আমার আর বুঝিতে বাকি রহিল না যে রমেশ-দা আত্মগোপনের চেষ্টা করিতেছেন। কিন্তু আমি মুখ ফুটিয়া কিছু বলিলাম না। সমস্ত ঘটনাটী হাসি ঠাট্টার উপর দিয়াই শেষ হইল।

 রমেশদা এক সময়ে রেঙ্গুনে থাকিতে মাদ্রাজী কথা শিখিয়াছিলেন। বৃন্দাবনে রঙ্গজীর মন্দিরে যাইয়া তিনি যখন স্বামীজি মহারাজের সঙ্গে আলাপ করিলেন, আমি আশ্চর্য্য হইয়া গেলাম। রামস্বরূপ আয়ার এই নামে রমেশদার চিঠি আসিত। অবশ্য অন্য সহরেও আমরা এযাবৎ ছদ্মনামে বাস করিয়াছি। কিন্তু এবারে রমেশদা যেন একটু বেশী সাবধান হইতেছেন। আমাকে এ সম্বন্ধে তিনি কিছুই বলেন নাই।

 কলিকাতায় থাকিতেই রমেশদা বন্ধুদের সহিত মিশিয়া মদ্যপান অভ্যাস করিয়াছিলেন। আমি তাহা জানিতাম না। বাহিরে আসিয়া হোটেলে ইউরোপীয়ান ষ্টাইলে থাকার সময় মদ্যপানের মাত্রা ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাইল। আমাকেও একটু আধটু খাইতে তিনি অনুরোধ করিয়াছিলেন। আপত্তি করিয়া বলিলাম “না —বিষেশতঃ দেহের এই অবস্থায়।” রমেশদা বলিলেন “সে এখনও ছয়মাস দেরী, তা’বলে কি স্ফূর্ত্তি মাটী করতে হয়?