পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাপের পথে
৭৩

তৈয়ারী করা দরকার— কিন্তু টাকারই ত অভাব।” আমি বলিলাম, “আমার সোনার হারছড়া বাঁধা রেখে কিছু টাকা ধার কর, তারপর একমাসের বেতন পেলেই ছাড়িয়ে আনতে পারবে।” রমেশদা মুখ ফিরাইয়া গম্ভীরভাবে বলিলেন “না, তাও কি হয়, তোমার সৎমার স্নেহের উপহার।” আমি বুঝিলাম, সেদিনের ব্যাপারে আমার উপর এ অভিমান ও শ্লেখ। আমি তখনি জামার হাতবাক্স খুলিয়া রমেশদার কোলের উপর হারটা ফেলিয়া দিলাম। সেই হার বন্ধকে পাওয়া দেড়শত টাকা রমেশদার হাতেই খরচ হইয়াছে। অথচ প্রফেসারী চাকুরীর জন্য যে একসুট পোষাক তৈয়ারী করিবার কথা ছিল তাহা হয় নাই।

 আমার সন্দেহ হইল, চাকুরীর কথা মিথ্যা। আমার শেষ সম্বল হার-ছড়া হস্তগত করিয়া তাহা দ্বারা মদের মূল্য সংগ্রহ করাই রমেশদার উদ্দেশ্য ছিল। আমি একদিন জিজ্ঞাসা করিলাম “কবে থেকে প্রফেসারী আরম্ভ করবে? রমেশদা বেশ চতুরতার সহিত উত্তর করিলেন “রাজা মহেন্দ্রপ্রতাপ হঠাৎ বৃন্দাবন ছেড়ে চলে গেছেন। গভর্ণমেণ্ট তাঁর গ্রেপ্তারী পরওয়ানা বাহির করেছে। এইত হয়েছে এখন মুস্কিল।” পাছে আমার সন্দেহ হয়, সেইজন্য ‘হিন্দু নামক সংবাদপত্র হইতে পড়িয়া আমাকে রাজা মহেন্দ্রপ্রতাপের বিষয় শুনাইলেন।

 মথুরায়, বৃন্দাবনে তখন ঝুলনের উৎসব আরম্ভ হইয়াছে। আমি রমেশদাকে বলিলাম “চল একবার দ্বারকাধীশের মন্দিরে যাই।” তিনি বলিলেন “না, আমার শরীরটা ভাল লাগছে না। তুমি লছমনকে সঙ্গে নিয়ে যাও।” লছমন আমাদের চাকরের