পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাপের পথে
৭৯

করিবার বুদ্ধি আমার ছিল না। আমার শরীর ও মন দুর্ব্বল হইয়া পড়িয়াছিল। কিন্তু আজ আমি পিতার কথার উত্তর দিতে পারি। আমার এই আত্মচরিত লেখা আরম্ভ করিবার কিছুদিন পূর্ব্বে গত ঝুলনের সময় আমি বৃন্দাবনে গিয়াছিলাম। সেখানে মোহান্তজীর সঙ্গে আমি পুনরায় সাক্ষাৎ করি। তাহার বিবরণ যথাস্থানে লিখিব। তখন তাঁহাকে বলিয়াছিলাম “বাবাজী, আমি মহাপাপী, সমাজে আমার স্থান নাই— পিতা আমায় পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। কিন্তু আমার মত পাপরতা, পতিতা নারীর পদতলে যে সকল পুরুষ তাহাদের মান, মর্য্যাদা, অর্থসম্পত্তি, দেহমন বিক্রয় করেছে, ঐ দেখুন, তাদেরে সমাজ মাথায় তুলে রেখেছে— তারা কবি ও সাহিত্যিক বলিয়া প্রশংসিত, রাজনীতিক ও দেশসেবক বলিয়া বিখ্যাত— ধনী ও প্রতিপত্তিশালী, বলিয়া সম্মানিত। এমন কি অনেক ঋষি-মোহান্তও গুরুগিরি ফলাইয়া সমাজের শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত আছেন, তাহা সমাজ জানিয়া শুনিয়াও নীরব। কোর্টে, কাউন্সিলে, করপোরেশনে, গুরুগিরিতে কোথাও তাদের কোন বাধা নাই। আর আমরা কবে বালিকা-বয়সের নির্ব্বুদ্ধিতার জন্য এক ভুল করে ছিলাম, তার ফলে এই বার-বৎসর ধরে, জ্বলে পুড়ে মরছি। এই ত আপনাদের সমাজের বিচার!”

 তিনমাস অতীত হইয়া গেল। একদিন মোহান্তজী বাগানে আসলে নামকিষণ তাঁহাকে বলিল, “বাবা, এ যে পোয়াতী মেয়ে, এত খাটুনীতে পেটের ছেলেটার কোন কিছু না হয়।” আমি তখন নিকটেই বসিয়া গোবরের ঘুঁটে তৈয়ার করিতে