পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাপের পথে
৮৩

আমি কখনও সংযম শিখি নাই। প্রবৃত্তির অনলে কেবল ইন্ধন যোগাইয়াছি। গল্প, উপন্যাস পাঠ করিবার ফলে সমাজ শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ভাবই কেবল আমার মনের মধ্যে বদ্ধমূল হইয়াছে। উত্তেজনার বশে কার্য্যের পরিণামের দিকে দৃষ্টি যায় নাই।

 পতিতা নারীদের মধ্যে যাহারা এইরূপে পর-পুরুষের অবৈধ প্রেমে আকৃষ্ট হইয়া কুপথে আসে, তাহাদের সকলের ভাগ্যেই এই দশা ঘটে। সেই পুরুষটী অবোধ বালিকার সর্ব্বনাশ করিয়া অল্প সময়ের মধ্যেই তাহাকে ছাড়িয়া যায়। এমন কোন পতিতা নারী নাই, যে আমরণ তাহার প্রথম প্রণয়ীর সহিত বাস করিতেছে। অভিজ্ঞতা হইতে ইহার যুক্তিসঙ্গত কারণ আমি দেখাইয়া দিতেছি।

 অবৈধ প্রেম উত্তেজনার বশেই জন্মে। উত্তেজনা মাত্রই ক্ষণস্থায়ী ও তাহা কদাচ বিচার বুদ্ধি প্রসূত নহে। সুতরাং যে প্রেম অল্পেতেই জন্মে— তাহা অল্পেতেই বিনাশ প্রাপ্ত হয়। এই প্রকার অবৈধ প্রেমে মিলিত নারীপুরুষের বিচ্ছেদের কারণ— একের বা উভয়েরই দোষ অথবা অবস্থার পীড়ন। অর্থাভাব, গর্ভসঞ্চার, রূপ-বিকৃতি, এই সব হইল অবস্থার পীড়ন। মদ্যপানের অভ্যাস, অপরের প্রতি আসক্তি এই সব হইল নারী পুরুষের দোষ।

 আমাদের ব্যাপারে দুই-ই ঘটিয়াছিল। রমেশদার মদ্যপান ও আমার অসময়ে সন্তান সম্ভাবনা আমাদের বিচ্ছেদের কারণ। যদি রমেশদা হিন্দুর সামাজিক রীতি অনুসারে আমাকে বিবাহ