পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেহ বিক্রয়
৯৫

শুনিতে আমার সহিয়া গিয়াছিল। বুঝিলাম স্কুলের পড়া হইতে যে অল্পবিদ্যা পাইয়াছি তাহা আমার অহঙ্কার বাড়াইয়া সর্ব্বনাশ করিয়াছে—কিন্তু আমাকে পাপের আক্রমণ হইতে বাঁচাইতে পারে নাই।

 আমরা সন্ধ্যার পরে সাজিয়া গুজিয়া আরতি দেখিবার ছলে নিকটবর্ত্তী ঠনঠনিয়া কালিবাড়ীতে যাইতাম। সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়াইয়া যখন দেখিতাম আমরা কোন ভদ্রবেশধারীর নজরে পড়িয়াছি, তখন বাড়ীর দিকে যাত্রা করিতাম। সেই ভদ্রবেশধারী ব্যক্তিও আমাদের সঙ্গ লইত। এইরূপে শিকার ধরিবার কৌশল রাণী বাড়ীওয়ালী আমাদিগকে শিখাইয়াছিল।

 আমি প্রথমে যাইতে আপত্তি করিতাম। আমার ভয় ছিল যদি বাপের বাড়ীর কাহারও সাঙ্গ দেখা হয়। যদি নন্দদাদা, সেই হরিমতি ঝি, অথবা বাবার মোটর ড্রাইভার, এমন কি বাবা নিজেই যদি দেখিয়া ফেলেন! রাজবালা আমাকে সাহস দিয়া বলিল “তোমাদের বাড়ী এ পাড়ায় নয়—সেত এখান হইতে অনেক দূরে; কলিকাতার মত সহরে কে কার খবর নেয়। এ পাড়ার লোক ও পাড়ায় যায় না।” আমিও বুঝিলাম তাহাই; অবশেষে আমি সাবধানে রাজবালার সহিত বাহিরে যাইতাম। আমার আর একটা আশা ছিল, যদি মুকুলদাকে কখনও রাস্তায় দেখি। কারণ আমার মনে পরে তাঁহার বাড়ী এ পাড়াতেই ছিল।

 একদিন শীতের রাত্রিতে ঠনঠনিয়া কালিবাড়ী হইতে ফিরিবার সময় দেখিলাম একজন ভদ্রলোক মাথায় র‍্যাপার জড়াইয়া আমাদের পিছু পিছু আসিতেছেন। আমাদের বাড়ী