পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

পর্যন্ত আসিয়া তিনি রাজবালার ঘরে গেলেন। পরদিন রাজবালা আমাকে ডাকিয়া বলিল কাল রাত্রিতে যে লোকটী আমার ধরে এসেছিল তিনি কে জানিস্? —বৈঠকখানার বাজারের কাছে কি একটা কলেজ আছে সেই কলেজের তিনি বড় প্রফেসার, তাঁহার নাম শ্রী......। তিনি আরও দুই তিন দিন আমার ঘরে এসেছিলেন।” আমিত নাম শুনিয়া অবাক। এঁর কথা মুকুলদার মুখে কতবার শুনিয়াছি। ইনি খুব ভাল পড়ান। আমি ভাবিলাম এই প্রফেসারের নিকট হইতে মুকুলদার কোন খবর পাওয়া যায় কিনা দেখিব।

 রাণী বাড়ীওয়ালী আমাদের বাড়ীতে মাঝে মাঝে আসিত; আমরা তাহকে রাণীমাসী বলিয়া ডাকিতাম। ক্রমে আমার ভয় দূরে গেল। আমি দেখিলাম অন্য সকল স্ত্রীলোক আমোদ-প্রমোদে মত্ত থাকে—নিঃসঙ্কোচে চলাফেরা করে— গঙ্গাস্না, কালীঘাটে, যেখানে সেখানে নির্ভয়ে যায়। তাহারা আমাকে বুঝাইল এখন আর ভয় করিস কাকে? গবর্ণমেণ্টের কাছে যখন একবার নাম রেজেষ্টারী করিয়েছিস— যখন একবার বলেছিল যে স্বেচ্ছায় এই বৃত্তি নিয়েছি, তখন আর কে তোকে কি বলবে? নাচতে নেমে লজ্জা করলে চলবে কেন?

 রাণীমাসী বলিল তোমার পিতা যখন মনে করেন তুমি মরিয়াছ, তিনি যখন তোমার আর ঘরে নিবেন না, তুমিও তাঁর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কচ্ছনা, তবে আর পিতাকেই বা ভয় কিসের? আমি বলিলাম, তবু পিতা যদি দেখেন তাঁর কন্যা তাঁর সম্মুখে পাপ ব্যবসা করছে, তাঁর মনে দুংখ হয় না?” রাণীমাসী কহিল, তিনি কন্যাকে ঘরে নিয়া অনায়াসে সেই দুংখ থেকে